বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব নির্যাতিত ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের প্রতি জানাই গভীর সমবেদনা-সহমর্মিতা। যুগে যুগে মানুষ বিভিন্ন রাষ্ট্রের স্বৈরশাসক, নিষ্ঠুর একনায়ক ও একদলীয় শাসনের ফলে নির্যাতিত হয়েছে। এখনও বিশ্বব্যাপী কোনো না কোনো অঞ্চলে ভাষা, বর্ণ, জাতি ও সম্প্রদায় নিয়ে সংঘাত চলছে। সংখ্যাগুরুরা সংখ্যালঘুদের ওপর চালাচ্ছে নির্যাতন। দেশে ন্যায়বিচার পাওয়ার সব পথ বন্ধ হয়ে গেছে।
শনিবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বাণীতে জাতিসংঘ ঘোষিত নির্যাতিতদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।‘বাংলাদেশে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে অবৈধ শাসকগোষ্ঠী জনগণের ওপর এখন ফ্যাসিবাদী জুলুম চালাচ্ছে। আর এক্ষেত্রে গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যাই হচ্ছে শাসকগোষ্ঠীর প্রধান অস্ত্র। বিভিন্ন অভিযানের নামে সারাদেশে বেআইনি হত্যার হিড়িক পড়ে গেছে। আর এই সমস্ত অভিযানে বিএনপিসহ বিরোধী দল ও মতের মানুষদেরও বেছে বেছে হত্যা করা হয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, যেহেতু জনগণের কাছে সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই, সেহেতু গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠানকে হাতের মুঠোয় নিয়ে একদলীয় অপশাসনের জগদ্দল পাথর জনগণের বুকের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। গণমাধ্যমকে হুমকি ও ভয় দেখিয়ে এবং নির্যাতন করে কব্জা করার অপচেষ্টা চলছে।
‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এখন সম্পূর্ণরুপে বিপন্ন। দেশে এখন দু:সময় চলছে। রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, মানবাধিকার কর্মী, রাজনৈতিক বিশ্লেষক যারা গণতন্ত্রের পক্ষে সোচ্চার তারা সরকারী জুলুমের শিকার হয়ে কেউ গুম হচ্ছেন, পঙ্গু হচ্ছেন, অথবা চিরদিনের জন্য হারিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপি নেতাকর্মীসহ ভিন্ন মত পোষণকারীদের বিরুদ্ধে গুম, মিথ্যা মামলা ও গ্রেফতারের হিড়িক পড়ে গেছে। সরকারের জুলুমের গতি পূর্বের মতোই চলমান।’
তিনি বলেন, জাতির সব অর্জন ও এগিয়ে যাওয়া এখন অন্ধকারে হারিয়ে যেতে বসেছে। জুলুম-নির্যাতনের ধারাবাহিকতায় গণতন্ত্রের ওপর সর্বোচ্চ আঘাত হানা হচ্ছে। এই নৈরাজ্যের অমানিশা আমাদের দুরীভূত করতেই হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রের মা’ বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ অসত্য ও বানোয়াট মামলায় প্রতিহিংসামূলক সাজা দিয়ে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। দেশনেত্রী ভীষণ অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও সরকার তার সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দিচ্ছে না। তার জীবনকে সংকটাপন্ন করে তোলা হয়েছে। আমি আন্তর্জাতিক নির্যাতন বিরোধী দিবসে দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকল নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।