বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পদ্মা সেতু হবে না। তাকে বলব- আসুন, দেখুন পদ্মা সেতু নির্মাণ হয়েছে কি না।’
আজ শনিবার দুপুর ১টার পর মাদারীপুরের শিবচরে কাঁঠালবাড়ী ঘাটে আয়োজিত জনসভায় এ কথা বলেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০১ সালে আমরা পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলাম। খালেদা জিয়া এসে তা বন্ধ করে দেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে। তখন তারা বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ কোনো দিন নাকি পদ্মা সেতুর কাজ করতে পারবে না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাঙালি জাতি কখনো মাথায় নোয়ায় না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মাথা নোয়াননি। তিনি আমাদের মাথা নোয়াতে শেখাননি। ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি জীবনের জয়গান গেয়েছেন। তারই নেতৃত্বে ২৩ বছরের রাজনৈতি সংগ্রাম এবং নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে এনেছি। তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মাওয়া-জাজিরা প্রান্তে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। যা মূল সেতুকে জাতীয় সড়ক যোগযোগ নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত করেছে। পদ্মা সেতুর ৪১টির মধ্যে ৩৭ স্প্যানের নিচ দিয়ে নৌযান চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘বিশ্বের সেরা প্রযুক্তিতে নির্মিত এ দৃষ্টিনন্দন দ্বিতল সেতু নির্মাণ করা হয়েছে স্টিল ও কংক্রিটের স্ট্রাকচারে। বহুমুখী এই সেতুর ওপরের ডেক দিয়ে যানবাহন এবং নিচের ডেক দিয়ে ট্রেন চলেবে। সেতু চালু হওয়ার পর সড়ক ও রেলপথে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ১৯টি জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সরাসরি যোগযোগ স্থাপিত হবে।’
আজ শনিবার দুপুর ১২টা ৩৬ মিনিটে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে টোল প্লাজা সংলগ্ন উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-২ উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। তার আগে বেলা ১১টা ৫৮ মিনিটে মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর ফলক উন্মোচন করেন তিনি। পরে তিনি মোনাজাতে অংশ নেন।
দুপুর ১২টা ০৬ মিনিটে সেতু দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর জাজিরার অভিমুখে রওয়ানা হয়। এর আগে বেলা ১১টা ৪৮ মিনিটে নিজহাতে নির্ধারিত টোল দেন প্রধানমন্ত্রী।
সকাল ১০টায় হেলিকপ্টারযোগে মুন্সীগঞ্জের দোগাছি পদ্মা সেতু সার্ভিস এরিয়া-১ এ পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। সেখান থেকে পদ্মা সেতুর উত্তর থানা সংলগ্ন মাঠে আয়োজিত সুধী সমাবেশে উপস্থিত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। সমাবেশে অংশ নেন সাড়ে তিন হাজার সুধীজন। যাদের মধ্যে ছিলেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, বিশিষ্ট নাগরিক ও সাংবাদিকরা।