সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে পেঁয়াজ ও আলুর দাম বেড়েছে। এক লাফে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ১৫ টাকা পর্যন্ত। আলুর দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা। তবে আলু ও পেঁয়াজের দাম বাড়লেও সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমেছে।
শুক্রবার (২৪ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের কেজি বিক্রি করছেন ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। এক সপ্তাহ আগে পেঁয়াজের কেজি ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা।
পেঁয়াজের এমন দাম বাড়ার বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী মো. হাবিবুর রহমান বলেন, দেশি পেঁয়াজের বড় অংশ মজুতে চলে গেছে। আবার বন্যার কারণে কিছু পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কমেছে। এ কারণেই দাম বেড়েছে।
খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম বলেন, কিছুদিন আগে আমরা পেঁয়াজের কেজি ৩৫-৪০ টাকা বিক্রি করেছি। বৃহস্পতিবার আড়ত থেকে পেঁয়াজ কেনা পড়েছে ৫০ টাকা কেজি। এই পেঁয়াজ ৫৫ টাকায় বিক্রি করে খুব একটা লাভ হয় না।
তিনি বলেন, আড়তে যেহারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে, তাতে সামনে খুচরায় দাম আরও বাড়তে পারে। বন্যার অজুহাতে এখন পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হচ্ছে। দ্রুত বাজারে মনিটরিং জোরদার না করলে পেঁয়াজের বাজারে আবার অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে।
পেঁয়াজের মতো দাম বেড়েছে আলুর। ব্যবসায়ীরা আলুর কেজি বিক্রি করছেন ৩০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে যা ছিল ২৫ টাকা। আর মাসখানেক আগে ছিল ২০ টাকা।
আলুর দামের বিষয়ে মালিবাগ হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর বলেন, আড়তে আলুর দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এক মাসের মধ্যে কেজিতে আলুর দাম বেড়েছে ১০ টাকা। নতুন আলু না আসা পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা নেই। বরং সামনে দাম আরও বাড়তে পারে।
এদিকে মুরগির বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হয় ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। ব্রয়লার মুরগির দাম কমলেও সোনালি মুরগির কেজি গত সপ্তাহের মতো ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
মুরগির দামের বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী মো. আরিফ বলেন, গত সপ্তাহে সোনালি মুরগির দাম কমেছিল। এ সপ্তাহের ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে। বাজারে মুরগির সরবরাহ বাড়লেও বিক্রি কমেছে, আমাদের ধারণা এ কারণেই মুরগির দাম কমতির দিকে। সামনে মুরগির দাম আরও একটু কমতে পারে।
সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা গত সপ্তাহের মতো সব থেকে বেশি দামে বিক্রি করছেন গাজর। এক কেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এই সবজির দামে পরিবর্তন আসেনি। তবে গত সপ্তাহে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া শসার দাম বেড়ে এখন ৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
প্রতি কেজি পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এ সবজিটির দামে তেমন পরিবর্তন আসেনি। টমেটোর মতো অপরিবর্তিত রয়েছে বরবটি ও বেগুনের দাম। বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। করলাও গত সপ্তাহের মতো ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া কাঁচা পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, পটল, ঢেঁড়স, ঝিঙে, চিচিঙ্গার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে। কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এ সবজিগুলোর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সবজির দামের বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দামে তেমন পরিবর্তন আসেনি। তবে আমাদের ধারণা কয়েকদিনের মধ্যে সবজির দাম একটু বাড়তে পারে। কারণ বন্যায় সবজি ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। শিগগির এর একটা প্রভাব বাজারে পড়বে।
মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা। তেলাপিয়া, পাঙাস মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৬০ টাকা। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা। কৈ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকা। পাবদা মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব মাছের দামে পরিবর্তন আসেনি।