চলতি বছর বিশ্বের ১০ লাখ মানুষ হজ পালন করতে পারবে বলে জানিয়েছিল সৌদি আরব। সৌদি সরকারের এমন ঘোষণার পর অস্ট্রেলিয়া ও পশ্চিমা ইসলামিক সম্প্রদায় হতবাক হয়।
সৌদি আরব গত এপ্রিলে জানায়, হজযাত্রার জন্য বিদেশিদের অনুমতি দেয়ার জন্য তারা সীমান্ত খুলে দেবে। এ ঘোষণার পর অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের মুসলমানরা প্রাথমিকভাবে খুশি হয়েছিলেন।
কোভিড-১৯ মহামারির কারণে গত দুই বছর মক্কা ও মদিনার পবিত্র স্থানগুলোর তীর্থযাত্রা বন্ধ ছিল। করোনা সংক্রমণ কমে যাওয়ার পর সৌদি হজ মন্ত্রণালয় থেকে আর কোনো ঘোষণা না আসায় ট্রাভেল অপারেটর ও হজপ্রত্যাশীরা প্রশ্ন তোলে। বড় অর্থনৈতিক লোকসানে পড়ে তারা।
মেলবোর্নের এক ট্রাভেল অপারেটর পরিচয় গোপন রেখে এবিসি নিউজকে জানান, এ বিষয়ে কাউকে কোনো স্পষ্ট উত্তর দেয়া হয়নি। তারা (সৌদি) বলেছিল, রমজানের আগে আমাদের জানাবে, আমরা অপেক্ষা করেছিলাম। কিন্তু ঈদ গেল, আশানুরূপ কোনো ঘোষণা এলো না।
গত ৬ জুন সৌদি সরকার জানায়, পশ্চিমা দেশগুলোর মুসলমানদের শিগগিরই বিদ্যমান যে কোনো ফ্লাইট ও হোটেল বুকিং বাতিল করতে হবে। এ খবরে বিপাকে পড়ে সেখানকার মুসলমানরা।
সৌদি আরব জানায়, যারা এ বছর হজে যেতে চান তাদের সদ্য চালু হওয়া মোতাইফ ওয়েবসাইটে আবেদন করতে হবে। এ জন্য মাত্র চার দিন সময় দেয়া হয়েছিল। এটি একটি ই-লটারি সিস্টেম। হজের এ নিয়মের পরিবর্তন পশ্চিমা মুসলিমদের হতবাক করেছে।
নতুন বিধিনিষেধ, কারা হজ করতে পারছেন
আগে পশ্চিমা দেশগুলোর মুসলমানরা ট্রাভেল এজেন্সি ও হজ ট্যুর এজেন্সির মাধ্যমে হজে যেতে পারত। কিন্তু এখন হজযাত্রীদের সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেয়ায় তাদের সেই সুযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়া কারা আবেদন করার যোগ্য, তার ওপরও বিধিনিষেধ রয়েছে।
সৌদি হজ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, হজপালনকারীদের বয়স হতে হবে ৬৫ বছরের নিচে এবং তাদের অবশ্যই পূর্ণ ডোজ টিকা নেয়া থাকতে হবে।
মুসলিম ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকের চাহিদা মোকাবিলায় সৌদি সরকার হজযাত্রা জন্য এ ই-লটারি পদ্ধতির ব্যবস্থা করেছে। যারা আগে একবার হজ করেছে, তাদের এবার প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে না।
ইসলামের মৌলিক স্তম্ভের একটি হলো হজ। এটি মুসলানদের জীবনে একবার পালন করা ফরজ করা হয়েছে। এটি বিশ্বের বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশের মধ্যে অন্যতম।
২০১৯ সালে ২৫ লাখ হজযাত্রী হজ পালন করেন। তবে ২০২০ সালে করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর ১ হাজার হজযাত্রীকে হজ পালনের অনুমতি দেয় সৌদি আরব। ২০২১ সালে টিকার পূর্ণ ডোজ নেয়াদের মধ্য থেকে ৬০ হাজার হজযাত্রীকে লটারির মাধ্যমে বাছাই করা হয় হজের জন্য।