ইইউতে ইউক্রেনের প্রার্থী সদস্য মর্যাদা অনুমোদন

Slider সারাবিশ্ব


ইউক্রেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রার্থী সদস্য হিসেবে মর্যাদা দেয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছে ইইউ পার্লামেন্ট। বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দুই দিনব্যাপী শীর্ষ সম্মেলনের প্রথম দিনে ইউক্রেনকে প্রার্থী হিসেবে মর্যাদা দেয়া হয়। ইউরোপিয়ান কমিশন সবুজ সঙ্কেত দেয়ার পর এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নে আবেদনের পর প্রার্থী হতে বেশ কয়েক বছর সময় লাগে। কিছু ক্ষেত্রে এই মর্যাদা পেতে ১০ বছর সময় লেগে যায়। নাটকীয়ভাবে খুব তাড়াতাড়ি ইউক্রেন এই মর্যাদা পেতে চলেছে। ২৪ ফেব্রুয়ারি বিনা উস্কানিতে ইউক্রেনের ওপর রাশিয়া হামলা করে। এরপরেই ইউক্রেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রার্থী হওয়ার জন্য আবেদন করে। পাঁচ মাসের মধ্যেই ইউক্রেন সেই মর্যাদা পেতে চলেছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের পাশে দাঁড়াতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

গত সপ্তাহে ইউরোপীয় কমিশন ইউক্রেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রার্থী সদস্য হিসেবে সুপারিশ করে। এর ফলে ইউরোপীয় ব্লকে ইউক্রেনের যোগদানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ সম্পন্ন হয়। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লিয়েন গত ১৭ জুন এ সুপারিশের কথা জানিয়েছিলেন। এ সময় ইউক্রেনসহ মলদোভা ও জর্জিয়ার ইইউ সদস্যপদের আবেদনের বিষয়ে বক্তব্য দেন তিনি। তিনি বলেন, আমাদের একটি স্পষ্ট বার্তা রয়েছে- আর তা হলো, হ্যাঁ ইউক্রেনের ইউরোপীয় দৃষ্টিভঙ্গি প্রাপ্য। ইউক্রেনকে একটি প্রার্থী রাষ্ট্র হিসেবে স্বাগত জানানো উচিত। ভালো কাজ সম্পন্ন হবে ভেবে এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ কাজ এখনও বাকি। পুরো প্রক্রিয়াটি মেধাভিত্তিক। ফলে তা নিয়ম অনুসারে চলবে এবং অগ্রগতি নির্ভর করছে পুরোপুরি ইউক্রেনের ওপর।

এর আগে জার্মানি, ফ্রান্স এবং ইতালি- ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবচেয়ে প্রভাবশালী তিন দেশের নেতারা বলেছেন, তারা ইইউ-তে যোগ দেয়ার জন্য ইউক্রেনের আবেদন সমর্থন করেন এবং অবিলম্বে ইউক্রেনকে সদস্য প্রার্থীর মর্যাদা দেয়া উচিত।

কিয়েভে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ বলেছিলেন, ইউক্রেন ইউরোপীয় পরিবারেরই সদস্য- তবে ইইউ’র সদস্য হওয়ার জন্য সব যোগ্যতা তাদের পূরণ করতে হবে।

অন্যদিকে ইতালিয়ান প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি বলেন, রাশিয়ার হামলার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মাধ্যমে ইউক্রেনের মানুষ সেই সব মূল্যবোধকেই রক্ষা করছেন, যার ওপর ভিত্তি করেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন গড়ে উঠেছে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রুশ হামলা শুরুর পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হওয়ার আবেদন করেছিল ইউক্রেন। তার পর প্রক্রিয়াটি রেকর্ড গতিতে এগিয়েছে। ইইউতে নিযুক্ত ইউক্রেনীয় রাষ্ট্রদূত বিবিসিকে বলেছেন, এটি ইউক্রেনীয়দের জন্য মানসিকভাবে উৎসাহ দেবে। তবে তিনি এও বলেছেন, কেবল যুদ্ধ শেষ হলেই ‘বাস্তবের শান্তি’ ফিরে আসবে। প্রার্থীর মর্যাদা হলো ইইউ সদস্যপদ লাভের প্রথম আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ। ফ্রান্স এই সপ্তাহে বলেছে, ইউক্রেনের বিষয়ে ‘সম্পূর্ণ ঐকমত্য’ রয়েছে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দিতে বহু বছর সময় লেগে যেতে পারে এবং এ যাত্রায় সফল হওয়ার কোনো নিশ্চয়তা নেই।

ইউক্রেন যখন ইইউয়ের সদস্যপদের জন্য আবেদন করেছিল, ইউরোপ জুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখতে পাওয়া গিয়েছিল। রুশ হামলার পর ইউক্রেন নিজের অবস্থান থেকে বেশ কিছুটা সরে আসে। তারা সদস্য পদের পরিবর্তে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রার্থীর মর্যাদার জন্য আবেদন করেন। সেই সময় প্রথমে ১০টি দেশ ইউক্রেনকে প্রার্থীর মর্যাদা দেওয়ার বিরোধিতা করে।

ইউক্রেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রার্থী সদস্য দেশ হিসেবে অনুমোদন দেওয়ার পর ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লিয়েন এক টুইট বার্তায় বলেন, ইউরোপের জন্য আজ ‘শুভ দিন’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *