বাঙালির চিরায়ত ঐহিত্যের রঙ আর বর্ণিল আয়োজনে উদযাপন হচ্ছে বাংলা নববর্ষ ১৪২২। পহেলা বৈশাখের সূর্যোদয়ে মধ্য দিয়ে বাঙালি মনে এসেছে চির নতুনের ডাক। সব জীর্নতা আর গ্লানি মুছে নতুনেরে বরণ করে নিতে তাই দেশজুড়ে শুরু হয়েছে বর্ষ বরণের উৎসব। সূর্য উদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর রমনার বটমূলে শুরু হয় ছায়ানটের বর্ষবরণের আয়োজন। ভোর সোয়া ৬টায় রমনা বটমূলে শুরু হয় ছায়ানটের বর্ষবরণের আয়োজন। অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ভোর থেকেই সেখানে ভিড় করছেন হাজারো মানুষ। বৈশাখের রঙে পোশাক আর চিরায়ত ঐহিত্যের নানা অনুসঙ্গ হাতে নিয়ে সাধারণ মানুষ যোগ দেন অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠান ঘিরে গতকাল থেকেই রমনা এলাকা কঠোর নিরাপত্তা চাদরে ঢেকে দেয়া হয়। ঘড়ির কাটায় সোয়া ৬টা বাজতেই রমনার মঞ্চ থেকে ভেসে আসে সেতারের সুর। এর মধ্য দিয়ে দিয়ে শিল্পিরা স্বাগত জানান নতুন বছরকে। এরপর চলে রবীন্দ্র সংগীত। ‘শান্তি, মানবতা ও মানুষের অধিকার’ শিরোনামে ছায়ানট এবার বৈশাখ উদযাপন করছে। রমনা পার্কে আগতদের বাতাসা আর গোলাপ ফুল তুলে দিয়ে বর্ষবরণ উৎসবে স্বাগত জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশ। সকাল ৮টা ২০ মিনিটে ছায়ানটের শিল্পীরা জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন। তাদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে কণ্ঠ মেলান হাজারো মানুষ। ছায়াটনের অনুষ্ঠানে অনেক বিদেশীও অংশ নিচ্ছেন শাড়ি, পাজামা, পাঞ্জাবি পরে। এদিকে সকাল সাড়ে নয়টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার সামনে থেকে বের হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। ‘অনেক আলো জ্বালতে হবে মনের অন্ধকারে’ এ প্রতিপাদ্য নিয়ে বের করা শোভাযাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণী পেশার হাজারো মানুষ যোগ দেন এতে। ১০ টি ত্রিমাত্রিক প্রতীক ঘিরে এই শোভাযাত্রা ছিল বাঙালির ঐহিত্যের নানা প্রতীকে বর্ণিল। শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আআমস আরেফিন সিদ্দিক। রূপসী বাংলা হোটেল মোড় ঘুরে সকাল ১০টার দিকে চারুকলার সামনে এসে মঙ্গল শোভাযাত্রাটি শেষ হয়। এদিকে রমনার পাশাপাশি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, টিএসসি, শিশুপার্ক, বাংলা একাডেমিসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশেও চলছে বর্ষ বরণের নানা আয়োজন। নানা শ্রেণী পেশার হাজারো মানুষ পরিবার নিয়ে যোগ দিয়েছেন উৎসবে। সারা দেশে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হচ্ছে পহেলা বৈশাখ। বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।