আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি ফুটবলার দিয়েগো ম্যারাডোনার মৃত্যুতে অপরাধমূলক অবহেলার দায়ে অভিযুক্ত আটজন চিকিৎসা কর্মীর বিচার করা হবে বলে জানিয়েছে আর্জেন্টিনার পেনাল কোড। একটি মেডিকেল প্যানেল ম্যারাডোনার চিকিৎসা ঘাটতি এবং অনিয়ম থাকার প্রমাণ হওয়ায় বিচারক সেই চিকিৎসকসহ ৮ জনের বিচারের আদেশ দিয়েছেন।
২০২০ সালের নভেম্বরে বুয়েনস আইরেসে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান দিয়েগো ম্যারাডোনা। নভেম্বরের শুরুতেই মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করার পর সুস্থ হয়েই বাসায় ফিরেছিলেন আর্জেন্টাইন কিংদবন্তি। তবে তার কিছুদিন পরই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ৮৬’র বিশ্বকাপ জয়ী আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। তার মৃত্যুর কয়েকদিন পর আর্জেন্টিনার প্রসিকিউটররা তার মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত ডাক্তার ও নার্সদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে।
গত বছর ম্যারাডোনার মেডিকেল টিমের একটি প্যানেল গঠন করা হয়। সেখানে ২০ জন বিশেষজ্ঞের সেই প্যানেলে জানানো হয়, ম্যারাডোনার মেডিকেল টিম তার চিকিৎসা ঘাটতি এবং বেপরোয়া পদ্ধতিতে কাজ করেছে। ফলে বিশেষজ্ঞ দল জানায়, ম্যারাডোনার মেডিকেল টিম যদি উপযুক্ত চিকিৎসার দিতো তবে ম্যারাডোনা বেঁচে থাকার আরও ভালো সুযোগ পেতেন।
এদিকে ম্যারাডোনার ছেলের আইনজীবী মারিও বউড্রি বলেন, কারণটা দেখার সাথে সাথে আমি বললাম এটা হত্যাকাণ্ড। আমি দীর্ঘ সময় ধরে লড়াই করেছি এবং এ পর্যায়টি সম্পন্ন করে আমরা এখানে এসেছি।
যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন ম্যারাডোনার নিউরোসার্জন এবং ব্যক্তিগত ডাক্তার লিওপোল্ডো লুক, একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এবং মনোবিজ্ঞানী, দুজন ডাক্তার, দুজন নার্স এবং তাদের বস। তারা সবাই তার মৃত্যুর দায় অস্বীকার করেছেন।
যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে আর্জেন্টিনার পেনাল কোড অনুযায়ী এ অপরাধে অপরাধীদের আট থেকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। যদিও বিচারের তারিখ এখনও নির্ধারণ করা হয়নি।
ডিয়েগো ম্যারাডোনাকে সর্বকালের সেরা ফুটবলারদের একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বিখ্যাত ‘হ্যান্ড অফ গড’ গোল করে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ এনে দিয়েছিলেন তিনি।
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়া শেষে ম্যারাডোনা মাদকে আসক্ত হয়ে যান। ১৯৯১ সালে ড্রাগ টেস্টে পজিটিভ আসার কারণে তাকে ১৫ মাসের জন্য ফুটবল থেকে নিষিদ্ধও করা হয়।