শনিবার রাতে মৃত্যদণ্ড কার্যকরের পর মি কামারুজ্জামানের মৃতদেহ শেরপুরের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং কড়া পুলিশ প্রহরার মধ্যে আত্মীয়-স্বজন ও কিছু প্রতিবেশীর উপস্থিতিতে আজ রবিবার ভোরবেলা তার দাফন অনুষ্ঠিত হয়।
ভোররাতে মো: কামারাজ্জামানকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স যখন শেরপুর সদর উপজেলার কুমরি বাজিতখিলা গ্রামে পৌঁছায় তখন তার বাড়িকে ঘিরে রেখেছিল কয়েকশো পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আর্মড পুলিশের সদস্য। কাউকেই আশেপাশে ভিড়তে দেয়া হচ্ছিল না।
নামাজে জানাজায় অংশ নিতে পারে জনা পঞ্চাশেক মানুষ, যাদের অধিকাংশই ছিলেন মি কামারুজ্জামানের স্বজন, বাকিরা প্রতিবেশী। এই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়েই ভোর সোয়া পাঁচটা নাগাদ তাকে কবর দেয়া হয়।
সকাল সাতটার পর পুলিশ বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করলে সেখানে সাংবাদিকেরা এবং স্থানীয় মানুষজন প্রবেশাধিকার পায়। এসময় ঘটনাস্থলে ছিলেন স্থানীয় সাংবাদিক আব্দুর রহিম।
আব্দুর রহিম পরে বিবিসিকে বলছিলেন, ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়া অনেককেই বিলাপ করতে দেখেছেন তিনি। এরা মূলত মি কামারুজ্জামানের আত্মীয়, প্রতিবেশী এবং উৎসুক জনতা।
জামায়াত বা শিবিরের দলীয় কোনও কর্মসূচী এই গ্রামে কিংবা শেরপুরে চোখে পড়েনি, স্থানীয়ভাবে তাদের তরফ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়াও আসেনি বলে উল্লেখ করেন সাংবাদিক আব্দুর রহিম।
তবে জামায়াতে ইসলামির ওয়েবসাইট থেকে জানা যাচ্ছে, আজকের দিনটিতে তারা দেশ জুড়ে দোয়া অনুষ্ঠানের কর্মসূচী পালন করছে এবং আগামীকাল হরতাল পারন করবে। মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের মৃত্যুতে দেশে এবং বিদেশের বিভিন্নস্থানে আজ গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে বলেও জামায়াত ও শিবিরপন্থী বিভিন্ন ওয়েবসাইটে খবর ও ছবি প্রকাশিত হচ্ছে।
তবে এর আগে ২০১৩ সালের শেষভাগে আরেক জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হবার পর পর যেভাবে বাংলাদেশে সহিংস প্রতিক্রিয়া হয়েছিল, আজ এই প্রতিবেদন তৈরি করা পর্যন্ত দেশের কোনও জায়গা থেকেই তেমন কোনও সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলছেন, তাদের কাছে যে গোয়েন্দা প্রতিবেদন ছিল, তাতে সহিংসতা হবে বলে কোনও পূর্বাভাসও ছিল না।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে শনিবার রাত সাড়ে দশটায় জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
এর ঘন্টাখানেক পরেই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে তার মৃতদেহ শেরপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করিয়ে দেয়া হয় তার পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করবার জন্য।