সিলেট:বন্যায় ভাসছে সিলেট ও সুনামগঞ্জ। এ দুই জেলার অর্ধেক এলাকা এখনো অন্ধকারে। মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই। সেখানে আটকে পড়া মানুষজন পড়েছেন ভয়াবহ বিপদে। পানিবন্দি থেকে জীবনযাপন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। তবে গতকাল থেকে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। বিভিন্ন উপজেলার পাশাপাশি নগরীর আশপাশ এলাকায় পানি কমেছে।
বন্যায় পানিবন্দি হয়ে আটকে আছেন বহুসংখ্যক মানুষ। তাদের উদ্ধার করতে প্রয়োজনীয় নৌকার সংকট রয়েছে। এ সুযোগে নৌকাভাড়া অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে মাঝিরা। নৌকা নিয়ে স্বজনরা আটকে-পড়াদের তীব্র স্রোতের মধ্যে নিরাপদে আনার চেষ্টা করছেন। কিন্তু ২ ঘণ্টার জন্য ভাড়ায় নৌকা নিতে চাইলে ভাড়া চাওয়া হচ্ছে ৩০ হাজার টাকা।
গোয়াইনঘাটের মোতালিব নামের এক ব্যক্তি জানান, সকালে তিনি ৩৫ হাজার টাকায় নৌকা ভাড়া করে তার স্ত্রী ও সন্তানদের তিন দিন পর উদ্ধার করেছেন। উদ্ধারকাজে নৌকার সঙ্কট চলছে। সেনা, নৌ, বিমানবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ নিজেদের স্পিডবোট নিয়ে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে।
রাতের অন্ধকারে আতঙ্কে সময় কাটছে বানভাসী মানুষের। এই সুযোগে দোকানিরা মোমবাতির দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন। ২৫ টাকার মোমবাতির প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। টাকা দিয়ে মানুষ মোমবাতি পাচ্ছেন না। বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ থাকার কারণে হারিকেনও কিনতে পাওয়া যাচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকা বন্যায় তলিয়ে যাওয়ার পর সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) ৩২টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
সিটি করপোরেশন স্থানীয় কাউন্সিলরদের দেখাশোনার দায়িত্ব দিলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের দেখা নেই। শুকনো খাবার সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হয়েছে সিসিক।
সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো: আনোয়ার সাদাত জানান, ‘জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তবে বন্যা-কবলিত এলাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় নৌকার সঙ্কটে এসব ত্রাণ পাঠানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এরপরও সব জায়গায় ত্রাণ পাঠানোর চেষ্টা চলছে।’