কিশোরগঞ্জ: সিলেট-সুনামগঞ্জের পর বন্যা এবার ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে কিশোরগঞ্জে। গত ২৪ ঘন্টায় জেলার সবকটি নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দী হয়ে পড়ছে লাখ লাখ মানুষ।
বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়ছে জেলার ১৩ উপজেলার মধ্যে করিমগঞ্জ, তাড়াইল, নিকলী, ইটনা, মিঠামইন অষ্টগ্রাম ও বাজিতপুরের মানুষ।
শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলাগুলোর কয়েক হাজার বাড়িঘরে পানি উঠেছে। তলিয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট, বাজার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
বাড়িঘর ছেড়ে অনেক পরিবার নৌকা ও উঁচু স্থানে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। বসতবাড়িতে পানি উঠে যাওয়ায় শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। নদ-নদীতে প্রবল বেগে পানি এখনো বাড়ছে। এ অবস্থায় মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রের খোঁজে ছুটছেন।
স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানায়, শুক্রবার রাতে ১৪ থেকে ১৫ ঘণ্টাতেই জেলার হাওর উপজেলাগুলোর অন্তত ৪০টি ইউনিয়নের ৩০ শতাংশ বাড়ি-ঘরে পানি উঠে গেছে। প্লাবিত হয়েছে রাস্তাঘাট। কৃষকেরা তাদের গবাদিপশু নিয়েও চরম বিপাকে আছে। বন্যা আরো ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, দুর্গত এলাকার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা-কবলিত গ্রামগুলোতে ইতোমধ্যে ১৪৪ টন চাল বরাদ্দ করে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মতিউর রহমান জানান, উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কিশোরগঞ্জের হাওরের সব জায়গায় পানি বাড়া অব্যাহত রয়েছে। হাওরের ওপর প্রবাহিত বিভিন্ন নদ-নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় তিন ফুট বেড়েছে। পানি বেড়ে যাওয়া অব্যাহত থাকলে রোববার থেকে অবস্থার আরো অবনতি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, পরিস্থিতি মোকাবেলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সাথে সমন্বয় করে কাজ শুরু হয়েছে। আমি এই মুহূর্তে দুর্গত এলাকাগুলোতে রয়েছি। মানুষের সঙ্কটে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়ার প্রস্তুতি প্রশাসনের রয়েছে।