সারা দেশেই আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হবে। কোথাও মাঝারি, কোথাও ভারি। আবার চার বিভাগে অতিভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আজ শনিবার দেওয়া আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানা গেছে।
গতকাল শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশেই বৃষ্টি হয়েছে। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি ২৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে। এ ছাড়া কিশোরগঞ্জের নিকলীতে ১৩৫, ময়মনসিংহে ১২৭, নেত্রকোনায় ২০৬, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ১৮৮ ও সিলেটে ১০৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকায় ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
অতিভারি বৃষ্টির কারণে সিলেটের বন্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ভারি বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় শনিবার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
এ বিষয়ে আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান জানান, আজ শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়ার সঙ্গে বিজলি চমকানোসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ হতে পারে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, শনিবার সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় রেকর্ড পরিমাণ ২৫০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হতে পারে। এতে সিলেট শহর, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, ও বিয়ানীবাজার উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, সুরমা ছাড়া দেশের সব প্রধান নদ-নদীর পানি বাড়ছে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম, মেঘালয় ও হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গের কিছু স্থানে মাঝারি থেকে ভারি, কোথাও কোথাও অতিভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এতে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, গঙ্গা-পদ্মা, সুরমা, কুশিয়ারা, তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমারসহ সব প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণা জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি বা ওপরে অবস্থান করতে পারে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী ও রংপুর জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলেও জানান নির্বাহী প্রকৌশলী।
শনিবার দুপুরে নদ-নদীর পরিস্থিতি ও পূর্বাভাস প্রতিবেদনে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ১১টি নদীর পানি ১৭টি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি হাতিয়া, চিলমারী ও ফুলছড়ি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কাজীপুর, সারিয়াকান্দি ও বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে যমুনা নদীর পানি।
এ ছাড়া দুধকুমার নদীর পানি পাটেশ্বরী, ধরলা নদীর পানি কুড়িগ্রাম, সারিগোয়ান নদীর পানি সারিঘাট, খোয়াই নদীর পানি বাল্লাহ, পুরাতন সুরমা নদীর পানি দেরাই, সোমেশ্বরী নদীর পানি কমলাকান্দা এবং কংস নদীর পানি জারিয়াঞ্জাইল পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট ও সিলেটে, কুশিয়ারার পানি অমলশীদ ও শেওলা পয়েন্টে বিপৎসীমোর ওপর দিয়ে বইছে।