তামিম ইকবাল ও মেহেদী হাসান মিরাজ আউট না হলে আক্ষেপের বদলে স্বস্তি নিয়েই দ্বিতীয় দিন শেষ করতে পারতো বাংলাদেশ। যদিও মাহমুদুল হাসান জয় ও নাজমুল হোসেন শান্ত অপরাজিত থাকায় এখনো চাইলে স্বস্তি খুঁজতে পারে টাইগার ক্রিকেট সমর্থকরা। জয় ১৮ ও শান্ত অপরাজিত রয়েছেন ৮ রানে, ২ উইকেটে সাকিব আল হাসান বাহিনীর সংগ্রহ ৫০ রান। স্বাগতিকদের চেয়ে তারা এখনো পিছিয়ে ১১২ রানে।
তামিম ইকবাল, আলজারি জোসেফ ও জশুয়া ডা সিলভা। নামগুলো একই। প্রথম ইনিংসে জোসেফের বলে সিলভার হাতে ধরা পড়েছিলেন বাংলাদেশের ড্যাশিং ওপেনার। দ্বিতীয় ইনিংসেও তা-ই। ব্যতিক্রম শুধু একটি জায়গায়, প্রথম ইনিংসে লেগের বল খেলতে গিয়ে আউট হলেও দ্বিতীয় ইনিংসে তামিম আউট হয়েছেন অফ স্টাম্পের বাইরে আউটসুইং খেলতে গিয়ে। তামিমের বিদায়ে ৩৩ রানে ভাঙে টাইগারদের উদ্বোধনী জুটি। ৩১ বলে ২২ রান করেন তামিম। জোসেফের বলে মিরাজ আউট হন স্লিপে ক্যাচ দিয়ে। ফেরার আগে ৬ বলে ২ রান করেন তিনি।
বাংলাদেশের ১০৩ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে ২৬৫ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৯৪ রান করেন দলপতি ক্রেগ ব্রাথওয়েট। বালাদেশের বোলিং লাইন-আপের সামনে বড় বাধা হয়ে উঠেছিলেন ব্রাথওয়েট। ওপেনিংয়ে নেমে সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে ছিলেন তিনি। সেই ব্রাথওয়েটকে সেঞ্চুরির আগেই ফেরান খালেদ মাহমুদ। গুড লেংথের এক বলে এলবিডব্লিউর শিকার হয়ে ফিরে যান ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক। আউট হওয়ার আগে ২৬৮ বলে ৯টি চারের মার খেলেন তিনি। এ নিয়ে ৭৮ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে পাঁচবার নার্ভাস নাইন্টিজে আউট হলেন তিনি। দুবারই আউট হয়েছেন ৯৪ রানে। ৯৭ রানে একবার, ৯৫ রানে একবার ও ৯১ রানে একবার উইকেট বিলিয়ে দেন তিনি।
কাইল মায়ার্স যে বাংলাদেশের বিপক্ষে কতটা ভয়ঙ্কর সেটা অভিষেক টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেই বুঝিয়েছিলেন। বাংলাদেশ সেই মায়ার্সের উইকেট পায় অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের বিচক্ষণতায়। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে এলবিডব্লিউর আবেদন নিয়ে রিভিউ নিলে সফল হন সাকিব। প্যাভিলিয়নে ফিরে যান মায়ার্স। মিরাজ ফেরান জশুয়া ডা সিলভাকেও। ফেরার আগে ২৪ বলে ৭ রান করেন মায়ার্স। মিরাজের বলে সিলভা আউট হন নুরুল হাসান সোহানের হাতে ক্যাচ দিয়ে।
আলজারি জোসেফ মিরাজের বলে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। ১৫ বল খেলেও কোনো রান তুলতে পারেননি তিনি। কেমার রোচও এবাদতের শিকার হওয়ার আগে কোনো রান তুলতে পারেননি। খালেদের গুড লেংথের বলে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে মিরাজের হাতে ক্যাচ উঠিয়ে দেন হাফসেঞ্চুরিয়ান ব্লাকউড। ১৩৯ বলে ৬৩ রান করেন তিনি। উইন্ডিজের শেষ ব্যাটার হিসেবে মিরাজের আউট হন জায়দেন সিলস। বাংলাদেশের হয়ে ৪ উইকেট নেন মিরাজ। এবাদত ও খালেদ পান দুটি করে উইকেট। সাকিব ও মুস্তফিজ শিকার করেন একটি করে উইকেট।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের ৫১ রানের ইনিংসের ওপর ভর করে শেষ পর্যন্ত ১০৩ রান করতে সক্ষম হয় সফরকারীরা। ক্যারিবীয় বোলারদের মধ্যে ৩টি করে উইকেট শিকার করেন আলজারি জোসেফ ও জায়দেন সিলস। দুটি করে উইকেট শিকার করেন কেমার রোচ ও কাইল মায়ার্স।
সাকিবের ফিফটি ছাড়া ব্যাট হাতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন অন্য ব্যাটাররা। বলার মতো স্কোর ছিল শুধু তামিম ইকবালের করা ২৯ রান। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১২ রানের ইনিংস খেলেন লিটন কুমার দাস। বাকিরা কেউ স্পর্শ করতে পারেননি দুই অঙ্কের ঘর। শূন্য রানের লজ্জায় ডোবেন ছয় টাইগার ব্যাটার।