রাশিয়া বিশ্বকাপ ফাইনালে লুকা মদ্রিচদের সেই কান্নার দৃশ্য এখনো ঘুরেফিরে। ক্রোয়েশিয়ার প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপার স্বপ্নভঙ্গ করে সেদিন উৎসবে মেতেছিল করিম বেনজেমা-এমবাপ্পেরা। এরপর আরও তিনবার দল দুটি মুখোমুখি হলেও ফ্রান্স বধ করতে পারেনি। তবে এবার অপেক্ষা ঘুচেছে। নেশন্স লিগের ম্যাচে রাশিয়া বিশ্বকাপের প্রতিশোধ নিল ক্রোয়াটরা। ফ্রান্সকে তাদের মাঠেই ১-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে ক্রোয়েশিয়া।
ফরাসিদের বিপক্ষে সবমিলিয়ে চারবারের দেখায় এবারই প্রথম জয় পেল ক্রোয়েশিয়া। এর আগে নেশন্স লিগের প্রথম লেগ ১-১ গোলে ড্র হয়েছিল। সোমবার (১৩ জুন) স্তাদে দ্য ফ্রান্সে শুরুতেই পেনাল্টি কিকে দলকে এগিয়ে নেন কাপ্তান লুকা মদ্রিচ। গোল হজমের পর ফ্রান্স পাল্টা আক্রমণ শানালেও ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণ ভেদ করতে পারেনি।
ফ্রান্সকে হারিয়ে নেশন্স লিগের গ্রুপ ‘এ’-তে একধাপ এগিয়ে দুইয়ে উঠে এসেছে ক্রোয়েশিয়া। চার ম্যাচে তাদের পয়েন্ট সাত। অন্যদিকে, আগে থেকেই তলানিতে থাকা ফ্রান্সের অবস্থা আরও শোচনীয় হলো। লেসব্লুসদের এবারের আন্তর্জাতিক বিরতিটা দুঃস্বপ্নের মতো কাটছে। চার ম্যাচে দুই ড্র এবং দুই হারে পয়েন্ট মোটে ২।
স্তাদে দ্য ফ্রান্সে ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ক্রোয়েশিয়া। দ্বিতীয় মিনিটেই কর্নার কিক আদায় করে নেয় সফরকারীরা। যদিও সে যাত্রায় গোল আসেনি। তবে গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি ক্রোয়াটদের। ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ।
ফ্রান্সের ডি-বক্সের ভেতরে কোনাতে কর্তৃক ফাউলের শিকার হন ভুদিমির। বল বিপদসীমা পার করানোর চেষ্টা করেন করিম বেনজেমা। তবে তার আগেই পেনাল্টির বাঁশি বাজায় আম্পায়ার। সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করলেন না ক্রোয়েশিয়া অধিনায়ক লুকা মদ্রিচ। প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক মাইক মিয়াকে ফাঁকি দিয়ে জাল খুঁজে নিতে বেগ পেতে হলো না রিয়াল মাদ্রিদের এ তারকাকে।
গোল হজমের পর মরিয়া হয়ে ওঠে ফ্রান্স। মিনিট দুয়েক পর দারুণ সুযোগও এসেছিল সমতায় ফেরার। বল নিয়ে প্রায় ক্রোয়েশিয়ার গোলপোস্টে প্রায় ঢুকে পড়েছিলেন এমবাপ্পে। তবে শেষ পর্যন্ত বিফলে যায় সেই চেষ্টা। প্রথমার্ধের বাকি সময়ে দুই দলের কেউই কার্যকরী শর্ট উপহার দিতে পারেনি। আর তাই কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়নি গোলরক্ষকদেরও।
দ্বিতীয়ার্ধের অষ্টম মিনিটে বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন বেনজেমা। তবে প্রতিপক্ষের ঘিরে থাকা অবস্থায় শট নেওয়ার জায়গা বের করতে পারেননি তিনি, শেষে বলও হারিয়ে ফেলেন। পরের মিনিটে এমবাপ্পের আরেকটি দূরপাল্লার শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
শেষ দিকে আরও মরিয়া হয়ে ওঠে ফ্রান্স। ভালো সুযোগও পায় তারা, কিন্তু ব্যর্থতার জাল ছিঁড়তে পারেনি কেউ। একেবারে শেষ সময়ে কোনাতের হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে আরও একবার হতাশায় মাঠ ছাড়ে ফ্রান্স।