ইংরেজি, অঙ্ক ও বিজ্ঞান। এই তিনটি বিষয়ে ৩৫, ৩৬ ও ৩৯—এই তার পাওয়া নম্বর। মাতৃভাষাতে পেয়েছিলেন ৪৪। সমাজ শিক্ষায় ৪৫। রেজাল্টে যে দু’টি নম্বর ৬০-এর উপর, তার একটি শারীরিক শিক্ষা। অন্যটির বিষয় ‘স্পষ্ট’ নয়। অথচ সেই খারাপ ছাত্রটিই এখন ভারতের গুজরাটের ভারুচের জেলা প্রশাসক (ডিসি)।
গত শনিবার টুইটারে নিজের ক্লাস টেনের মার্কশিট প্রকাশ করেন তুষার ডি সুমেরা। এরপর তার রেজাল্ট দেখে চমকে যায় সবাই। মুহূর্তেই পোস্টটি ভাইরাল হয়ে যায়।
তুষার জানান, সে সময় তার টেনেটুনে পাশমার্ক তোলা রেজাল্ট দেখে অনেকে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। স্কুল, প্রতিবেশী—সবাই বলেছিল এই ছেলেকে দিয়ে কিছু হবে না। আত্মীয়-স্বজনরাও তাই বিশ্বাস করতেন। ভাবতেন, ছেলে বড় হয়ে বখে যাবে। তবে তাকে নিয়ে করা কোনো ভবিষ্যদ্বাণী শেষ পর্যন্ত মেলেনি।
২০১২ সালে ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন (ইউপিএসসি) পরীক্ষায় বসে আইএএস (ইন্ডিয়ান অ্যাডমনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস) অফিসার হন তুষার। এখন তিনি ভারুচের জেলা শাসক। তবে এমন টেনেটুনে পাশমার্ক তোলা ছাত্র কীভাবে আইএএস অফিসার হলেন তা স্পষ্ট করেননি তুষার।
তাকে অভিনন্দন জানিয়ে টুইট করেছিলেন ছত্তীসগড়ের এক সিনিয়র আইএএস অবনীশ শরন। সেখানে অনেকেই মন্তব্য করেছেন বোর্ডের পরীক্ষায় খারাপ নম্বর মানেই ভবিষ্যৎ অন্ধকার, এটা ভেবে নেওয়াটা ভুল। চেষ্টা করলে যে সব সম্ভব, তার প্রমাণ ভারুচের জেলাশাসক।
প্রসঙ্গত, ভারতে আইএএস অফিসার হতে হলে ইউপিএসসি পরীক্ষা পাশ করতে হয়। এই পরীক্ষা পাশ করতে মেধার পাশাপাশি প্রয়োজন হয় ধৈর্য ও কঠোর অধ্যাবসায়ের। আইএএস অফিসার হতে পারলে প্রশাসনিক ক্ষমতার পাশাপাশি মেলে নানা সুযোগ সুবিধা। বিভিন্ন মন্ত্রাণালয় ও প্রশাসনিক বিভাগে তাদের পোস্টিং হয়। আইএএস অফিসারদের জন্য সর্বোচ্চ পদ দেশের ক্ষেত্রে ক্যাবিনেট সেক্রেটারি ও রাজ্যের ক্ষেত্রে মুখ্য সচিব।
যারা ইউপিএসসি পরীক্ষা পাশ করে আইএএস অফিসার হন অন্যান্য সুযোগ সুবিধার পাশাপাশি ভালো বেতন পেয়ে থাকেন। সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী একজন আইএএস অফিসার ৫৬ হাজার ১০০ টাকা বেসিক বেতন পান। এরপর ভ্রমণভাতা, মহার্ঘ ভাতা, বাড়ি ভাড়াসহ অন্যান্য ভাতা পেয়ে থাকেন।
একজন আইএএস অফিসার সব মিলিয়ে মাসে এক লাখ টাকা বেতন পান। এরপর অভিজ্ঞতা ও প্রমোশনের ভিত্তিতে বেতন বাড়তে থাকে। ক্যাবিনেট সেক্রেটারি পর্যায়ে পৌঁছালে বেতন বেড়ে দাঁড়ায় আড়াই লাখ টাকায়। আইএএস অফিসারদের জুনিয়র স্কেল, সিনিয়র স্কেল, সুপার টাইম স্কেলসহ ভিন্ন বেতনক্রম রয়েছে। এর ভিত্তিতেই যাবতীয় ভাতা ও তার পরিমাণ ঠিক হয়।