সরকার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়েই তাকে স্থায়ী মুক্তি দিতে চান না বলে মন্তব্য করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
সোমবার (১৩ জুন) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তার রোগ মুক্তির জন্য দোয়া অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তিতে সরকারকে বাধ্য করা হবে বলেও হুঁশিয়ার দেন তিনি।
এদিকে বেলা ১১টার দিকে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনের এক মানববন্ধনে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিনা রহমান বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, আজকে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার কোনো সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। তার যে রোগ তা চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠাতে হবে। তা না হলে তার চিকিৎসা হবে না। আজকে তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।
গত রোববার (১২ জুন) খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. মামুন জানান, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়া ছাড়া চিকিৎসা সম্ভব নয়। তার হার্টে এখনো দুইটি ব্লক আছে। দুটি ব্লকের কারণে আবারও তার হার্টে রিং পরাতে হবে। আর সেজন্য তাকে দ্রুত বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করানো প্রয়োজন।
এর আগে শনিবার (১১ জুন) সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, খালেদা জিয়ার মাইল্ড হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। হৃদযন্ত্রের প্রধান আর্টারিতে ধরা পড়েছে ৯৯ শতাংশ ব্লক। রিং পরানো হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি বেগম জিয়াকে বিদেশে নিতে আবারও আহ্বান জানান।
এর আগে শুক্রবার (১০ জুন) মধ্যরাতে হঠাৎ হৃদযন্ত্র ও শ্বাসযন্ত্রের জটিলতা শুরু হওয়ায় বেগম খালেদা জিয়াকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি করা হয়। করোনারি কেয়ার ইউনিটে ভর্তির পর শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বৈঠকে বসে বেগম জিয়ার জন্য গঠিত ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড।
বৈঠকে বেগম জিয়ার হৃদযন্ত্রের জটিলতার জন্য এনজিওগ্রামসহ বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা।
২০২১ সালের এপ্রিলে কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পর এ নিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ দফায় হাসপাতালে ভর্তি করা হলো। গত ৬ এপ্রিল নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে একই হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল। এর আগে চিকিৎসকরা বেগম জিয়ার ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।
উল্লেখ্যে, দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান বেগম খালেদা জিয়া। করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে সাজা স্থগিত করে সাময়িকভাবে মুক্তি দেয়া হয় তাকে। এরপর থেকে গুলশানের বাসায় থাকছেন ৭৬ বছর বয়সী বেগম খালেদা জিয়া।