জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ ওয়াদুদ ভূঁইয়াকে হত্যাচেষ্টা, গাড়িবাড়ি ভাঙচুর ও পুলিশ মামলা গ্রহণ না করার প্রতিবাদে বিএনপির ডাকা ২৪ ঘণ্টার অবরোধ চলছে। মঙ্গলবার (৭ জুন) সকাল ৬টা থেকে বুধবার (৮ জুন) সকাল ৬টা পর্যন্ত এ অবরোধ চলবে। জেলা বিএনপি এ অবরোধের ডাক দেয়।
ভোর ৬টা থেকে অবরোধ শুরু হলেও শহরের কয়েকটি স্থান ছাড়া বিএনপি নেতাকর্মীদের তৎপরতা তেমন একটা দেখা যায়নি। সকালের দিকে জেলা শহরের মহাজনপাড়া এলাকায় প্রধান সড়কে বিএনপির সমর্থকরা টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছের ডাল ফেলে গাড়ি চলাচলের বিঘ্ন সৃষ্টি করলে তাৎক্ষণিক পুলিশ সেখানে গেলে অবরোধ সমর্থকরা পালিয়ে যায়।
পরে কর্তব্যরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরা সদস্যরা আগুন নিভিয়ে, গাছের ডাল সরিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়।তবে অবরোধের কারণে সকাল থেকে জেলার দূরপাল্লার ও আন্তঃজেলার কোনো যানবাহন চলাচল করেনি ।তবে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে কিছুসংখ্য টমটম (অটো) ও বিভিন্ন স্কুলের পরীক্ষার্থীদের বহন করা ছোটখাটো যানবাহনে যাতায়াত করতে দেখা যায়। এ চলমান অবরোধের মাঝেও কর্মস্থল খোলা থাকায় কর্মজীবী মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে । হেঁটে তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা যায়।
অবরোধের কারণে জনদুর্ভোগে পড়েছে বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা পর্যটকরা। মঙ্গলবার (৭ জুন) সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া অবরোধে বাধার মুখে পড়েছে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত সব পর্যটক। তারা জানিয়েছেন, সকাল থেকে ডাকা বিএনপির অবরোধ পর্যটকরা না জানার কারণেই এমন দুর্ভোগে পড়েছে। তারা যে হোটেল বুক করেছে সেখান থেকে তাদের কিছু জানানো হয়নি। তাই এমন বাধার মুখে পড়েছে বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা পর্যটকরা।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক সৌরভ সূত্রধর জানান, আমরা আগে থেকে জানতাম না যে এই জেলায় অবরোধ আছে। সকালে এসে গাড়ি থেকে নামার পর জানতে পরি এখানে বিএনপির লোকজন অবরোধ দিয়েছে। এখন আমরা যেতে পারছি না সাজেক। আমাদের হোটেল বুক করা। যদি যেতে না পারি তাহলে আমাদের অনেক ক্ষতি হবে। ঘুরতে আসার যে মন-মানসিকতা তা নষ্ট হয়ে যাবে।
পর্যটক নাজমুল শেখ বলেন, আমরা কালকে রাতে ঢাকা থেকে রওনা হয়েছি সাজেক যাওয়ার উদ্দেশ্য। আমাদের পূর্বে জানা ছিল না এখানে অবরোধ। এখন আমরা এসে বিপদে পড়ে গেছি। এদিকে হোটেল বুক করা। সাজেক যেতে না পারলে আমরা বুকিংয়ের টাকাও ফেরত পাব না।
নাইম ইসলাম জানান, আমরা ঘুরতে আসছি খাগড়াছড়ি ও সাজেকের উদ্দেশ্য। সকালে এসেই অবরোধে আটকা পড়েছি। এখন সাজেক কাউন্টার থেকে গাড়ি যাচ্ছে না। প্রশাসন সহযোগিতা করলে আমরা সাজেক যেতে পারব। আমাদের ঘোরার যে আশা ছিল তা পূরণ করতে পারব।
সাজেক কাউন্টারের লাইনম্যান মো. আরিফ জানান, বিএনপির ডাকা অবরোধে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তাই আমরা সাজেকের উদ্দেশে কোনো গাড়ি যেতে দিচ্ছি না। পর্যটকরা দুর্ভোগে পড়েছে। যদি প্রশাসন থেকে কোনো সহযোগিতা পাই তাহলে গাড়ি ছাড়ব।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রশিদ জানান, সকাল থেকে অবরোধ চলাকালে যেন কোনো ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটে সেদিকে তৎপর রয়েছে পুলিশ সদস্যরা। কোনো ধরনের ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করলে পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবে।