টাকার মান আরও ৪৫ পয়সা কমলো

Slider অর্থ ও বাণিজ্য


ডলারের বিপরীতে টাকার মান আরও কমলো। গতকাল (সোমবার) ডলারের বিপরীতে টাকার মান ১ টাকা ৬০ পয়সা কমে বিনিময় মূল্য হয় ৯১ টাকা ৫০ পয়সা। মঙ্গলবার তা আরও ৪৫ পয়সা কমে দাঁড়িয়েছে ৯১ টাকা ৯৫ পয়সায়।

মঙ্গলবার (৭ জুন) এক দিনের ব্যবধানে বাংলাদেশ ব্যাংক এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংক মঙ্গলবারই ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে এক ডলারের বিপরীতে ৯১ টাকা ৯৫ পয়সা নিয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। ডলারের দর ব্যাংকগুলোর ওপর ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তের পর থেকে ৫ দিনে চার দফায় দাম কমলো টাকার। গত মে মাসেও ডলারের বিপরীতে চার দফা কমেছিল টাকার মান।

এর আগে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি মার্কিন ডলারের দাম ৮৯ টাকা ৯০ পয়সা নির্ধারণ করে দিয়েছিল। যা তার আগে ছিল ৮৯ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম জানান, প্রবাসীদের খুশি করার জন্য প্রকৃত দরের উপর মূল্যায়ন করে ডলারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ৯১ টাকা ৯৫ পয়সা। ব্যাংকগুলোর কাছে প্রতি ডলার বিনিময় মূল্য ৯১ টাকা ৯৫ পয়সা ধরে ১৩০ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে। সব মিলিয়ে এ অর্থবছরে ৬০৭ কোটি ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু এরপর থেকে বড় ধরনের আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে গিয়ে ডলার সংকট শুরু হয়। যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে।

২০২১ সালের আগস্টের শুরুতেও আন্তঃব্যাংকে প্রতি ডলারের মূল্য একই ছিল। ৩ আগস্ট থেকে দু-এক পয়সা করে বাড়তে বাড়তে গত বছরের ২২ আগস্ট প্রথমবারের মতো ৮৫ টাকা ছাড়ায়। এ বছরের ৯ জানুয়ারিতে এটি বেড়ে ৮৬ টাকায় পৌঁছে। এরপর ২২ মার্চ পর্যন্ত এ দরেই স্থির ছিল। পরে গত ২৩ মার্চ আন্তঃব্যাংকে আরও ২০ পয়সা বেড়ে ৮৬ টাকা ২০ পয়সায় দাঁড়ায়। ২৭ এপ্রিল আরও ২৫ পয়সা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা। ১০ মে বাড়ে আরও ২৫ পয়সা। ১৬ মে বাড়ে ৮০ পয়সা। ২৩ মে বাড়ে ৪০ পয়সা। ফলে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম গিয়ে ঠেকে ৮৭ টাকা ৯০ পয়সায়। এর পর গত ২৯ মে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার ৮৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

এর পরও বাজার স্থিতিশীল হয়নি। পরে সংকট নিরসনে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) এবং ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকারস, বাংলাদেশের (এবিবি) দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (২৯ মে) বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলার ৮৯ টাকা বেঁধে দেয়। আর আমদানিকারকদের কাছে বিক্রির জন্য বিসি সেলিং রেট নির্ধারণ করা হয় ৮৯ টাকা ১৫ পয়সা। যদিও ব্যাংকগুলো আন্তঃব্যাংক লেনদেনে প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য ৮৯ টাকা ৮০ পয়সার প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু তাতেও বাজার স্থিতিশীল না হওয়ায় ২ টাকা ৫ পয়সা বাড়িয়ে ৯১ টাকা ৯৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা এ যাবতকালের সর্বোচ্চ মূল্য। আর খোলাবাজারে প্রতি ডলারের মূল্য রাখা হচ্ছে ৯৮ থেকে ৯৯ টাকা পর্যন্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *