চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম ডিপোতে আরও চারটি কনটেইনারে রাসায়নিক বস্তুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে। কনটেইনারগুলো নিরাপদে সরিয়ে রাখতে বিশেষ ব্যবস্থায় কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের বিশেষজ্ঞ টিম।
আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ১৮ ব্রিগেড অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, রাসায়নিক বস্তু ভর্তি আরও চারটি কনটেইনার শনাক্ত করা হয়েছে। কনটেইনারগুলো নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে রাখতে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের বিশেষজ্ঞ টিম।
ডিপোর বিভিন্ন জায়গায় এখনো ধোঁয়া উঠছে। এজন্য খুবই সতর্কতার সঙ্গে সেনাবাহিনী এবং ফায়ার সার্ভিসকে কাজ করতে হচ্ছে বলে জানান লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম।
এদিকে, বিএম কনটেইনার ডিপোতে লাগা আগুন প্রায় ৪০ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। কনটেইনারে এখনো ধিকি ধিকি জ্বলছে আগুন। থেমে থেমে আগুন জ্বলে উঠছে। আগুন নেভানোর কাজে নিয়োজিত ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনী সেখানে আবারও বিস্ফোরণের আশঙ্কায় সেখান থেকে সবাইকে বের করে দিচ্ছেন।
ফায়ার সার্ভিস বলছে, জ্বলন্ত কনটেইনারগুলোর পাশে একটি কনটেইনারে রাসায়নিক থাকতে পারে। এ কারণে সতর্কতার সঙ্গে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে তারা।
এদিকে, ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ করছে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা। বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও সাংবাদিকরা রয়েছে ডিপোর প্রধান ফটকে।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন দপ্তর থেকে এখন পর্যন্ত বিএম ডিপোকাণ্ডে ৪৯ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও চিকিৎসকদের আশঙ্কা সব মিলিয়ে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, কনটেইনার ডিপোটিতে ‘হাইড্রোজেন পার অক্সাইড’ নামে বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক ছিল। হাইড্রোজেন পার অক্সাইড একটি রাসায়নিক যৌগ; উচ্চতাপে এটি বিস্ফোরক হিসেবে আচরণ করে। বিস্ফোরণে পুরো এলাকায় রাসায়নিকের বিষাক্ত ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়েছে। এতে উদ্ধারকর্মীরাও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
এর আগে শনিবার রাতে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নে কদমরসুল এলাকায় বিএম ডিপোতে আগুনের পর বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে এখন পর্যন্ত ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং শতাধিক দগ্ধ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ১৫ জন।