চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ৪০ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও ডিপোর ৫০০ মিটার শেডের ভেতর এখনো ঢুকতে পারেননি কমকল কর্মীরা। জ্বলতে থাকা আগুন আর নতুন বিস্ফোরণের আশঙ্কায় উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে।
সোমবার (৬ জুন) বেলা পৌনে ১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ডিপোতে আগুন জ্বলছিল। অন্যদিকে, আগুন নিয়ন্ত্রণে বিরামহীন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিস ও সেনাসদস্যরা।
আগুন নেভানোর পুরো কাজের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক ফারুক হোসেন সিকদার। তিনি বলেন, আমরা এখনো আগুন নেভানোর কাজ করছি। আগুন পুরোপুরি নেভাতে সময় লাগবে। এখনো অনেক কনটেইনারে আগুন জ্বলছে, ধোঁয়া বের হচ্ছে। আমরা সাবধানতার সঙ্গে সেগুলোতে পানি দিচ্ছি।
অন্যদিকে ফায়ার সাভিসের উপ-পরিচালক (অভিযান) দুলাল মিয়া বলেন, আগুন এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। সময় লাগবে। আমাদের কাজ চলছে। ডিপোর ৫০০ মিটার শেডের ভেতর ঢুকে এখনো উদ্ধার অভিযান শুরু করা যায়নি। সেখান থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে।
তিনি জানান, আগুন ছাড়াও যেসব কনটেইনার জ্বলছে, তার পাশে আরও কিছু কনটেইনার রয়েছে। সেগুলোতে রাসায়নিক থাকলে নতুন বিস্ফোরণের আশঙ্কা আছে।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট কাজ করছে। ১২টি বিশেষ গাড়ির সাহায্যে জ্বলন্ত কনটেইনারগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন পানি ছিটানোর কাজ চলছে। কোনো গাড়ির পানি শেষ হলে সেখানে নতুন গাড়ি পাঠানো হচ্ছে। এছাড়া নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকেও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।
গত শনিবার (৪ জুন) রাত ৮টার দিকে বিএম কনটেইনার ডিপোর লোডিং পয়েন্টের ভেতরে আগুনের সূত্রপাত হয়। কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রথমে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। রাত পৌনে ১১টায় এক কনটেইনার থেকে অন্য কনটেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
রাসায়নিক থাকায় একটি কনটেইনারে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, স্থানীয় শ্রমিকসহ অনেকে হতাহত হন। পুড়ে যায় ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়িও।
এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা এক এক করে বেড়েই চলেছে। সবশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত নয় জন ফায়ার সার্ভিস কর্মীসহ ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। দগ্ধ হয়েছেন চার শতাধিক।