রক্ত দিতে চবির ৩০০ শিক্ষার্থীর লাইন

Slider বাংলার সুখবর


অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামানোর সময় খসে পড়ছে পোড়া হাত। কেউ চিৎকার করছেন অর্ধেক শরীর পুড়ে যাওয়ার যন্ত্রণায়, স্ট্রেচারের অভাবে পা হারানো ব্যক্তিকে চ্যাংদোলা করেই ঢুকানো হচ্ছে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের জরুরি ইউনিটে। বার্ন ইউনিটের বাতাসে আগুনে পোড়ার গন্ধ। সীতাকু-ের কনটেইনার ডিপোতে দগ্ধদের রক্ত দিতে চমেক হাসপতালে আসা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সৈয়দ মোহাম্মদ জাহেদুল ইসলাম তার এ অভিজ্ঞতার কথা জানান।

জাহেদুল বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি দেখে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রক্ত দিতে যাওয়া অনেক শিক্ষার্থীই অজ্ঞান হয়ে যান। এ অবস্থায় আমরা বারবার বলছি- যারা এ বিভৎসতা দেখে ভীতিতে আছেন তারা সরে যান।’

প্রথমে পুলিশের গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্সে করে প্রয়োজনের ভিত্তিতে এবং গতকাল রাত ২টায় পাঁচটি বাসে ৩০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী চমেক হাসপাতালে হাজির হন আহতদের রক্ত দিতে। ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্ট থেকে ভার্সিটির বাস ছেড়ে যায় চমেকের উদ্দেশে। পরে ট্রাক ও চবি থেকে পাঠানো তিনটি অ্যাম্বুলেন্সে আরও ৫০ শিক্ষার্থী চমেকে যান।

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম রনি ‘ও নেগেটিভ’ রক্তধারী। তিনি বলেন, ‘সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট পেয়ে কক্ষ থেকে বের হয়ে হাঁটা শুরু করি। সিদ্ধান্ত নিই রক্ত দেব আহতদের। দুটোর দিকে যখন জিরো পয়েন্টে পৌঁছাই, দেখি পুরো জনস্রোত। সবাই অপেক্ষা করছে গাড়ির জন্য। কেউ কেউ পরিচিত ড্রাইভারকে কল করছেন মুঠোফোনে। কেউ হাঁটা শুরু করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেটের উদ্দেশে। লক্ষ্য একটাই- যত দ্রুত সম্ভব চমেক হাসপাতালে পৌঁছানো। এত এত মানুষ দেখে মনে সাহস সঞ্চার হলো, আমিও পৌঁছতে পারব আহতদের কাছে। সময়ের প্রয়োজন আমাকে কাজে লাগবে।’

চবির প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, ‘ছাত্ররা বাসের প্রয়োজন জানানোর পর আমরা জরুরি ভিত্তিতে তা ব্যবস্থা করি। আমাদের ছাত্র সংগঠনগুলো এগিয়ে আসায় রক্তদাতা সংগ্রহ, গ্রুপ নির্ণয়সহ সব কাজ অনেক সহজ হয়েছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *