ব্রাজিলের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারি বৃষ্টিতে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৬ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা কর্তৃপক্ষের। খবর আল-জাজিরা।
দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলে টানা দুদিনের ভারি বৃষ্টিতে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে বন্যার পানির স্রোতে ভেসে গেছে একের পর এক বাড়ি। পানিতে ডুবে গেছে ঘর বাড়ি রাস্তা ঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ভয়াবহ এ বন্যা ও ভূমিধসে এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকজনের হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। তবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় উদ্ধার কাজে বেগ পেতে হচ্ছে দমকলকর্মীদের।
দেশটিতে একের পর এক বন্যা ও ভূমিধসে এভাবে মর্মান্তিক মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন অঞ্চলটির গভর্নর। এ ছাড়া পাহাড়ি ঢালগুলোতে স্থায়ী বসবাস এড়িয়ে চলাসহ সতর্ক থাকারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
অঞ্চলটির গভর্নর বলেছেন, এখন অন্তত ৯০জন উদ্ধারকর্মী নিখোঁজদের উদ্ধারে দিন রাত কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে। আমি আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে চলমান কাজে উদ্ধারকর্মীদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পাঠাতে বলেছি।
এ ছাড়াও আটলান্টিক উপকূলের দুটি বড় শহরে মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। শনিবার (২৮ মে) পেরনামবুকোতে ৩৩ জন মারা গেছেন। ভূমিধসে যখন প্রাণহানির ঘটেছে, তখন পাহাড়ি অঞ্চলের আশপাশের শহরাঞ্চল ধুয়ে নিয়েছে বৃষ্টি।
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে এ পর্যন্ত ৭৬৫ জনকে বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। পেরনামবুকোর পার্শ্ববর্তী রাজ্য আলাগোয়াসে দুজন মারা গেছেন।
গেল ডিসেম্বরের শেষ দিকে ও জানুয়ারির প্রথমে বাহিয়া রাজ্যে ঝড়ো বৃষ্টিতে কয়েক ডজন নিহত ও কয়েক হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
জানুয়ারির শেষ দিকে সাও পাওলোর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বন্যায় ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর ফেব্রুয়ারিতে রিও ডি জেনেরিওতে ২৩০ জনের বেশি প্রাণহানি ঘটেছে।
দক্ষিণ আমেরিকার দেশটিতে ২০২১ সালের বেশিরভাগ সময় খরায় কাটলেও শেষ মাসগুলোতে অস্বাভাবিকভাবে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। প্রায়ই এ রকম বন্যা জলবায়ু পরিবর্তনে ব্রাজিলের সম্ভাব্য ভূমিকা বিতর্ককে উসকে দিচ্ছে। দেশটির বিশৃঙ্খল নগর পরিকল্পনাও সামনে আসছে।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, দেশটির প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো শনিবার (২৮ মে) পেরনামবুকোতে পাঠানোর জন্য একটি ফেডারেল টাস্ক ফোর্স গঠন করেছিলেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্রাজিলে বন্যা ও ভূমি ধসের ঘটনা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। এ অবস্থার জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবকেই দুষছেন বিশেষজ্ঞরা।