রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ): চলছে মধুমাস জৈষ্ঠ্য, এই মাসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে হরেক রকমের সুস্বাদু ফল। ফলের তালিকায় রয়েছে আম, জাম, কাঠাল, লিচু ছাড়াও তালের শাঁস। এটি খুবই সুস্বাদু। গ্রাম্য ভাষায় এটি ‘তালকুই’ নামেই বেশি পরিচিত। গরমে অস্থির পথচারীদের এক মুহূর্তের জন্য হলেও স্বস্তি এনে দিচ্ছে এই কচি তালের শাঁস।
রায়গঞ্জ উপজেলার নিমগাছি, সাহেবগঞ্জ, গুড়কা, পৌর বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন স্থানে এখন বিক্রি হচ্ছে তালের শাঁস। ছোট বড় প্রকার ভেদে প্রতিটির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা দরে বিক্রি করছে বিক্রেতারা। আম ও লিচুসহ মৌসুমি অন্য ফলের ক্ষেত্রে বর্তমানে বিষাক্ত ফরমালিন ব্যবহারের ঘটনা খুবই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। কিন্তু তালের শাঁসে এসবের প্রয়োজন হয় না। ফলে ভেজালমুক্ত তাল শাঁসের কদর বেশি।
উপজেলার সাহেবগঞ্জ বাজারের তাল ব্যবসায়ী হাবিল উদ্দিন ও জসিম বলেন, গ্রামে গ্রামে ঘুরে তাল গাছের মালিকের কাছ থেকে পাইকারীর তাল ক্রয় করে গাছ থেকে পেড়ে এনে তাল শাঁস সলঙ্গাসহ পার্শবর্তী হাটে ও মেলায় বিক্রি করি।
তিনি বলেন, প্রচণ্ড গরম থাকায় তালের শাঁসের চাহিদা রয়েছে বেশি। বড় তাল প্রতি বিচি শাঁস পাঁচ টাকা করে এবং তিন বিচি তালের শাঁস বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়। আবার ছোট তালের বিচির শাঁস তিন টাকা।
নিমগাছি বাজরের তাল ব্যবসায়ী নাজিম বলেন, তাল গাছ থেকে ফল কেটে আনা একটি কষ্টকর বিষয়। অতিরিক্ত পারিশ্রমিক দিয়ে কেটে আনতে হয়। একটি গাছে ৩০০ থেকে ৩৫০টি তাল পাওয়া যায়। জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বিক্রি শুরু হয়, চলে পুরো মাস জুড়ে। প্রতি পিস তাল কিনতে হয় প্রকারভেদে তিন থেকে পাঁচ টাকায়। বিক্রি করেন ১০ থেকে ১৫ টাকা।
তিনি আরো জানান, গত সাত দিন ধরে বিক্রি করছি। প্রতিদিন বিক্রি হয় আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা। এতে দৈনিক লাভ হয় পাঁচ শ’ থেকে সাত শ’ টাকা ।
নিমগাছি বাজারে তালের শাঁস কিনতে আসা জুবায়ের বলেন, তালের শাঁস একটি সুস্বাদু ফল। প্রচণ্ড গরমে তালের শাঁস খেতে ভালই লাগে।
রায়গঞ্জ উপজেলার কমিনিটি মেডিক্যাল আফিসার ডা. রকিব উদ্দিন আহাম্মেদ জানান, তালের শাঁস শরীরের জন্য খুবই উপকারী। গরমের দিনে তালের শাঁসে থাকা জলীয় অংশ পানি শূন্যতা দূর করে। এছাড়া ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-এ বি সি সহ নানা ধরনের ভিটামিন রয়েছে। তালে থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় এবং কচি তালের শাঁস রক্তশূন্যতা দূর করে। চোখের দৃষ্টি শক্তি ও মুখের রুচি বাড়ায়।