কোলেস্টেরল আসলে কী? এটি মোমের মতো এক ধরনের ফ্যাটি পদার্থ; যা তৈরি হয় যকৃত (লিভার) থেকে। লাইপোপ্রোটিনের মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে কোলেস্টেরল। স্বাভাবিক অবস্থায় থাকলে হরমোন নিয়ন্ত্রণ এবং নতুন কোষ তৈরি করতে সাহায্য করে এই কোলেস্টেরল।
কিন্তু শরীরে প্রোটিনের অভাব হলে এবং ফ্যাটের পরিমাণ অনেক বেশি হয়ে গেলে, তা কোলেস্টেরলের সঙ্গে মিশে ‘লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন’ বা এলডিএল হয়ে যায়। তখনই কোলেস্টেরল শরীরের পক্ষে খুব ক্ষতিকর হয়ে যায়। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় যদি অস্বাস্থ্যকর ফ্যাটের পরিমাণ বেশি হয়ে যায় এবং কোনও রকম শরীরচর্চা করা না হয়, তাহলে কোলেস্টেরলের মাত্রা অনেকটা বেড়ে যেতে পারে।
যেসব লক্ষণ জানান দেবে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়েছে তা হলো-
১) কোলেস্টেরল খুব বেড়ে গেলে পায়ের টেন্ডন লিগামেন্টগুলোতে প্রভাব পড়ে। এ ক্ষেত্রে পায়ের ধমনীগুলো সরু হয়ে গেলে পায়ের নিচের অংশে অনেকটা অক্সিজেন-সহ রক্ত পৌঁছতে পারে না। তাতে পা ভারী হয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ে সহজেই। পায়ের অসম্ভব যন্ত্রণা শুরু হয়। উরু বা হাঁটুর নিচে পেছনের দিকে ব্যথা হতে পারে। হাঁটার সময়েই এ ধরনের ব্যথা বাড়ে।
২) একই কারণে ঘাঁড় ও হাতের সংযোগস্থলেও ব্যথা হয়। মাঝেমাঝে এমন ব্যথায় আমরা নাজেহাল হই। খুব ঘন ঘন একই স্থানে ব্যথা হলে একটু সতর্ক থাকুন।
৩) নিতম্বেও ব্যথা হওয়া উচ্চ কোলেস্টেরলের লক্ষণ হতে পারে। যদি মাঝেমাঝেই নিতম্বে ব্যথা হয় তা হলে কিন্তু সেই লক্ষণ ভালো নয়। এসব লক্ষণ দেখা দিলে একবার রক্ত পরীক্ষা করে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, তা দেখে নেওয়া জরুরি।
৪) ঘুমের মধ্যে পায়ের পাতায় বা আঙুলে হঠাৎ টান ধরে যাওয়াও উচ্চ কোলেস্টেরলের ইঙ্গিত হতে পারে। রাতে এ ধরনের সমস্যা বেশি হয়। পা নিচের দিকে ঝুলিয়ে রাখলে রক্ত চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হতে পারে। তাতে পায়ের টান ধরার যন্ত্রণা কমতে পারে। রক্ত চলাচল স্বাভাবিক না হলে পায়ের আঙুলের রঙেও বদল আসতে পারে। পায়ের নখের রং বদলে গেলেও সতর্ক হতে হবে।