করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে টালমাটাল অর্থনীতি আর চড়া নিত্যপণ্যের দাম। তবে জনগণকে স্বস্তি দিতে ভোজ্যতেলের মতো জ্বালানি তেল আমদানির ক্ষেত্রেও ভ্যাট কমানোর উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার। এ নিয়ে রাজস্ব বোর্ডে আবেদন করবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ (বিপু) দাবি করেছেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম নির্ধারণে সহনশীল সিদ্ধান্ত নিয়েই এগোচ্ছে সরকার। শিল্পে বাড়লেও আবাসিকে গ্যাসের দাম ‘খুব একটা বাড়বে না’ বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।
করোনার দুবছরের ধাক্কা কাটিয়ে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে সবকিছু। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিকে আবারও বেসামাল করে তুলছে। যার বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে দেশের অর্থনীতিতেও।
গ্যাসের মূল্য ৬৩ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাবের শুনানি শেষ হয়েছে গত মার্চে। এছাড়া সম্প্রতি পাইকারি বিদ্যুতের মূল্যও ৫৮ শতাংশ বৃদ্ধিতে পিডিবির প্রস্তাবের ওপর শুনানি শেষ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন।
অর্থনীতির এমন টালমাটাল অবস্থায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধিতে জনসাধারণ যখন নাকাল, তখন মূল্য সমন্বয়ের চলমান প্রক্রিয়ায় ব্যয় বৃদ্ধির নতুন শঙ্কা তৈরি করেছে।
জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী জানান, পরিস্থিতি সামাল দিতে জনগণের ব্যয়ভার যৌক্তিক পর্যায়ে রাখা বড় চ্যালেঞ্জ। এ অবস্থায় শিল্প গ্রাহক ছাড়া আবাসিক খাতের ব্যবহারকারীদের গ্যাসের খরচ ‘খুব একটা’ বাড়বে না বলেই ইঙ্গিত দেন তিনি।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী সময় সংবাদকে বলেন, গ্যাস সেক্টরে যেখানে কমার্শিয়াল ব্যবহার হয়, যেখানে কারখানায় ব্যবহার হয়, সেখানে আমাদের একটু নজরদারি করতে হবে। সেখানে হয়তো সামঞ্জস্য করার প্রয়োজন আছে। এখন বিদ্যুতের ক্ষেত্রেও আমরা কিছুটা গ্যাসের দামের সামঞ্জস্য চাই, কারণ সাধারণ মানুষের স্বস্তিটা কীভাবে রাখা যায়। এজন্য আমি আশ্বস্ত করতে পারি, সাধারণ গ্রাহক যারা আছেন সেখানে তারা ওরকম কোনো পরিবর্তন হয়তো আমরা আশা করব না।
সে সঙ্গে মূল্য স্বাভাবিক রাখতে ভোজ্যতেলের মতো, জ্বালানি তেলেও ভ্যাট শিথিলের আবেদন আনুষ্ঠানিভাবে রাজস্ব বিভাগকে জানাবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় বলে জানান তিনি।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, তেলের বাজারে দাম বেড়ে গেছে অনেক। আমাদের দাবি থাকবে, যে তেলে আমরা যে পরিমাণ ট্যাক্স বা ভ্যাট দেই সেই জায়গাটাতে আমরা বার বার বলে আসছি, সেখানে সামঞ্জস্য করা দরকার। সেখানে যদি সামঞ্জস্য করা যায় তাহলে কিছুটা সাশ্রয় হবে তেলে দামে। যাই হোক আমরা মন্ত্রণালয় থেকে লিখিতভাবে এনবিআরকে জানাব। মানুষ যেন স্বস্তি পায় দাম দেখে।
তবে জ্বালানি তেল, গ্যাস ও বিদ্যুৎ খাতে নিকট ভবিষ্যতের দিনগুলোতে কতটা স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতি তৈরি করবে সরকার, সেটা স্পষ্ট হতে পারে নতুন অর্থবছর শুরুর আগেই।