এক কেজি মোটা চাল ৪২ থেকে ৪৫ টাকা। অপরদিকে গো খাদ্য এক কেজি গমের ভুষির দাম ৬০ টাকা। মানুষের খাদ্যের চেয়ে গরুর খাদ্যের দাম বেশি। এতে বিপাকে পড়েছেন খামারী ও গৃহস্থরা। দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকে গরুর খাবার কমিয়ে দিয়েছে। এতে গরুর স্বাস্থ্যহীনতা এবং দুধের উৎপাদন কমে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য প্রাণি সম্পদ বিভাগ খামরী ও গৃহস্থদের গরুকে কাঁচা ঘাস বেশি করে খাওয়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন।
মাঠ পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুই সপ্তাহ আগেও গরুর খাদ্য গমের ভুষি ৩২ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। একই ভাবে ৩০ টাকার খৈল ৫০ টাকায়, ২০ টাকা ভুট্টার গুড়া ৪০ টাকা, ২০ টাকার খুদ ৩৫ টাকা, মাস কালাইর ভুষি ৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৪২ থেকে ৪৫ টাকা, সয়াভুষি ৫০ কেজি বস্তা ১৮০০ টাকা থেকে বেড়ে ৩ হাজার টাকা, মিক্সড ফিড ৭৮০ টাকার বস্তার এক হাজার টাকা, ভাল মানের ফিড একহাজার টাকা থেকে বেড়ে ১৩’শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শুকনো খড়ের দামও বেড়েছে প্রতি মনে ৫০ থেকে ৮০ টাকা। এভাবে প্রতিটি গো-খাদ্যের দাম দ্বিগুণ বেড়েছে।
দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে হারাগাছের এজানুর রহমানসহ কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, গমের দাম বেড়ে যাওয়ায় ফিড মালিকরা সব ধরণের ফিডের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তাই তারা বাধ্য হয়েছেন দাম বাড়াতে। এদিকে গো-খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে বিরুপ প্রভাব পড়েছে গবাদি পশুর ওপর। অনেক খামারী দাম বৃদ্ধির কারণে তাদের গবাদি পশুকে প্রয়োজনের তুলনায় কম খাবার দিচ্ছেন। এতে গরুর স্বাস্থ্য কমে যাচ্ছে। পাশাপাশি দুধের উৎপাদন করে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন খামারী ও গৃহস্থরা। দুধের ওপর নির্ভরশীল ব্যবসায়ীরা বলছেন গরুর দুধের উৎপাদন কমে গেলে বাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। দুধের দাম বাড়াতে পারে। দুধের দাম বাড়লে দুধের ওপর নির্ভরশীল যেসব খাদ্যপণ্য রয়েছে সেসবের দাম বাড়বে।
রংপুর নগরীর বুড়িরহাট এলাকার আরিফ হোসেন, নাসির উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন খামারী ও গৃহস্থ জানান, এমনিতে নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে তারা সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছে। তার ওপর গো-খাদ্যের দাম দ্বিগুণ বেড়ে যাওয়ায় তারা গরুকে ঠিক মত খাবার দিতে পারছেন না। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে যারা গরু পালন করছেন তারা রয়েছেন সবচেয়ে বড় বিপাকে। কিছু লাভের আশায় তারা না পারছেন গরু বিক্রি করতে, না পারছেন গরুকে ঠিক মত খাওয়াতে। গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় মারাত্মক সংকটে পরেছেন এর সাথে জড়িত খামারী ও গৃহস্থরা। তারা খামার ও দুগ্ধ শিল্প রক্ষায় জরুরীভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণের দাবি করেছেন।
রংপুর প্রাণিসম্পদ বিভাগীয় অফিসের উপ-পরিচালক ডা. সিরাজুল ইসলাম জানান, প্রাণি সম্পদ বিভাগের বাজার তদারকি করার ক্ষমতা নেই। এই অবস্থা থেকে উত্তোরণের জন্য খামরীদের কাঁচা ঘাস এবং কাঁচা ঘাস সংরক্ষণ (সাইলেজ) করে খাওয়ানোর পরামর্ম দেয়া হচ্ছে।