লোকচক্ষুর অন্তরালে কলায় বিষক্রিয়া

সম্পাদকীয়

kolaখাদ্য বিষক্রিয়ায় প্রতিদিনই ভীড় করছে হাসপাতালে, পত্রিকা খুললে এমন সংবাদ প্রতিদিনের। সম্প্রতি তরমুজ খেয়ে দিনাজপুরের একই পরিবারের তিন শিশু মারা গেছে, গুরুতর পরিবারের অন্যান্য লোকজন। ডাক্তার বলেছেন তরমুজের বিষক্রিয়াই এদের প্রান গেছে। এতো দৃশ্যমান কিন্তু লোক চক্ষুর অন্তরালে আমাদের দেশে ঘটেছে প্রতিদিন এমন ঘটনা। এগুলো দেখবে কে? এগুলো বন্ধের দায়িত্ব কার?
সম্প্রতি অপরাধ অনুসন্ধান টিম গিয়েছিল টাঙ্গাইলের মধুপুর জলছত্র নামক স্থানে। প্রধান সড়কের উপর যেখানে প্রকাশ্যে প্রশাসনের নাকের ঢগায় তারা হাজার হাজার কলায় স্প্রে করছে। বিষাক্ত এই স্প্রে মানবদেহে কতটা ক্ষতি করছে তা হয়তো এই কৃষক জানেনা। হয়তো তার ঘরেই চলে যাচেছ এই ভয়াবহ বিষ মিশ্রিত কলা। কিস্তু যাদের এ বিষয়গুলো দেখার কথা তারা কোথায়? তিন ঘন্টা অবস্থান করেও সেখানে কোন কৃষি কর্মকর্তা দেখা যায়নি। অথচ কৃষি সম্প্রসারন বিভাগ থেকে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সচেতন করার জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রেখেছেন তার পরেও এ অবহেলা কেন?

অপরাধ অনুসন্ধান টিম কৃষকের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, কলা পাকানোর জন্যই মূলত: তারা এই স্প্রে করে থাকেন কিন্তু তিনি জানেন না কলা পাকানোর জন্য তিনি যে ব্যবস্থা নিচ্ছেন এতে প্রানঘাতি অনেক রোগেরই জন্ম দেয়। ক্যান্সার, লিভার রোগ থেকে নানা রোগে আক্রান্ত হতে হয় এ কলা খেয়ে। কলা চাষীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই ভয়াবহতার সঙ্গে এর আগে কেউ তাদের পরিচয় করিয়ে দেয়নি। তারা জানেও না তারা নিজ হাতে বিষ মিশিয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে দিচ্ছে এই কলা। তাহলে মধুপুর কৃষি সম্প্রসারন বিভাগের কাজ কি? আরাম কেদারায় বসে হাওয়া খাওয়ার জন্যই কি সরকার তাদের নিয়োগ দিয়েছেন?

এ সমস্যায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর যথেষ্ট দায়িত্ব আছে বলেও অভিজ্ঞ মহল মনে করেন। এ প্রসঙ্গে মধুপুর থানার ওসি’র দৃষ্টি আকর্ষন করলে কোন কথা বলতে চাননা তিনি। অথচ স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাস্তায় প্রকাশ্য কলায় স্প্রে করার জন্য প্রতি মাসেই একটা নির্দিষ্ট অংকের টাকা মধুপুর থানায় দিতে হয়। ওসি মো:মজিবুর রহমান নিজে টাকা নেন না বলে অপরাধ অনুসন্ধানকে জানায়। এখন কথা হচ্ছে অপরাধীকে যদি অপরাধ করার সুযোগ দেয়া হয় তবে সে অপরাধ করবেই। এই অপরাধ বন্ধ করার জন্য চাই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার শক্ত অবস্থান। কিন্তু টাকার কাছে যখন সব কিছুই বিক্রি হয়ে যায় তখন সেই বিড়ালের গলায় ঘন্টা কে বাঁধবে তার অপেক্ষাই থাকতে হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *