ফিফার কাছে ৪৪০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। অর্থের পরিমাণে যা প্রায় কাতার বিশ্বকাপের মোট প্রাইজমানির সমান। কাতার বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে এই ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা। এক বিবৃতিতে বিষয়টি জানিয়েছেন অ্যামনেস্টির প্রধান অ্যাগনেস ক্যালামার্ড।
বিশ্বকাপ আয়োজনের অনুমতি পাওয়ার পর নানা ধরনের আধুনিক অবকাঠামো নির্মাণের উদ্যোগ নেয় কাতার। নতুন স্টেডিয়াম নির্মাণের পাশাপাশি, বিশ্বকাপে অতিথিদের আবাসনের ব্যবস্থা করতে হোটেল-মোটেল নির্মাণের তোড়জোড় শুরু হয় কাতারে। সেজন্য আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার বিপুল সংখ্যক শ্রমিক নতুন করে পাড়ি জমান দেশটিতে।
যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে গড়ে উঠছে বিশ্বকাপের অবকাঠামো সেই শ্রমিকদের মানবাধিকার রক্ষায় উদাসীন কর্তৃপক্ষ। এই অভিযোগ আগে থেকেই করে আসছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো। যুক্তরাজ্যের সংবাদ মাধ্যম গার্ডিয়ান এর রিপোর্ট অনুযায়ী বিশ্বকাপের অবকাঠামো নির্মাণের সময় কাতারে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার শ্রমিকের মৃত্যু হয়। ফিফার বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শেষ করতে এসব শ্রমিককে ব্যাপক চাপের মধ্যে কাজ করতে হয়েছে । এমনকি পাসপোর্ট আটক অবস্থায় বিদেশি শ্রমিকরা জোরপূর্বক শ্রম দিতে বাধ্য হয়েছেন।
এ সব কারণে ফিফার বিরুদ্ধে বরাবরই মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে বেশ কিছু মানবাধিকার সংস্থা। এবার ফিফার কাছে ৪৪০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। যা আসন্ন কাতার বিশ্বকাপের মোট প্রাইজমানির সমান। এজন্য ফিফাকে চিঠিও দিয়েছে অ্যামনেস্টি।
সংস্থাটির প্রধান অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেন, ‘২০১০ সাল থেকে কাতারে গুরুতর শ্রমিক নির্যাতনের অভিযোগ ছিল। এরপরও শ্রমিকদের মানবাধিকার রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত না করে কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয় ফিফা। এ জন্য ফিফার কাছে অন্তত ৪৪০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছি আমরা। যা প্রায় বিশ্বকাপের প্রাইজমানির সমান।’
অ্যামনেস্টির এই চিঠির প্রতিক্রিয়ায় ফিফা জানিয়েছে, শ্রমিকদের মানবাধিকার সুরক্ষায় কাজ করছে তারা। বিশ্বকাপের অবকাঠমো নির্মাণে শ্রমিকদের মানবাধিকার সুরক্ষায় পদক্ষেপের কথাও জানায় ফিফা। এরই মধ্যে আয়োজক কমিটির মাধ্যমে বেশ কিছু শ্রমিককে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান আন্তর্জাতিক ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।