প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একটি এমডি পদের জন্য পদ্মাসেতুর মতো সেতুর টাকা বন্ধ করেছে, তাকে পদ্মা নদীতে দুইটা চুবানি দিয়ে তোলা উচিত। মরে যাতে না যায়, পদ্মা নদীতে একটু চুবানি দিয়ে সেতুতে তোলে দেয়া উচিত। তাহলে যদি শিক্ষা হয়। পদ্মা সেতুর অর্থ বন্ধ করালো ড. ইউনুস। কেন? গ্রামীণ ব্যাংকের একটি এমডি পদে তাকে থাকতে হবে। আর খালেদা জিয়া বলেছিল, জোড়াতালি দিয়ে পদ্মাসেতু বানাচ্ছে। সেতুতে যে স্প্যানগুলো বসাচ্ছে, এগুলো তার কাছে ছিল জোড়াতালি দেয়া। বলেছিল, জোড়াতালি দিয়ে পদ্মাসেতু বানাচ্ছে, ওখানে চড়া যাবে না। চড়লে ভেঙে পড়বে। আবার তার সাথে কিছু দোসররাও… তাদেরকে এখন কী করা উচিত? পদ্মা সেতুতে নিয়ে গিয়ে ওখান থেকে টুস করে নদীতে ফেলে দেয়া উচিত।
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে বুধবার (১৮ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে চলে আলোচনা সভা ও ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি। তাতে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তাকে (ড. ইউনুস) আমরা প্রস্তাব দিয়েছিলাম, গ্রামীণ ব্যাংকের উপদেষ্টা হতে। উপদেষ্টা হিসেবে থাকা আরও উচ্চমানের। তার এমডি-ই থাকতে হবে। সেটা সে ছাড়বে না। কিন্তু তার বয়সে কুলায় না।
ড. ইউনুস সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোর্ট আর যাই পারুক, তার বয়স তো ১০ বছর কমিয়ে দিতে পারবে না। কারণ গ্রামীণ ব্যাংকের আইনে আছে, ৬০ বছর পর্যন্ত এমডি পদে থাকতে পারবে। তখন তার বয়স ৭১ বছর। বয়সটা কমাবে কীভাবে? সে মামলায় হেরে যায়। কিন্তু প্রতিহিংসা নেয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা শুনেছি, সে আর মাহফুজ আনাম আমেরিকায় যায়। স্টেট ডিপার্টমেন্টে যায়। হিলারি ক্লিনটনকে ইমেইল করে। মি. জোলি সে সময় বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তার শেষ কর্ম দিবসে, কোনো বোর্ড সভায় নয়, পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করে দেয়।
তাতে একদিকে সাপেবর হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ যে নিজের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করতে পারে, সেটা আজকে আমরা প্রমাণ করেছি। কিন্তু আমাদের এখানে একজন জ্ঞানী লোক বলে ফেললেন, পদ্মাসেতুতে যে রেল লাইন হচ্ছে, তাতে ৪০ হাজার কোটি টাকা খরচ হচ্ছে, তা তো ঋণ নিয়ে করা হচ্ছে। এ ঋণ কীভাবে শোধ হবে? দক্ষিণবঙ্গের কোনো মানুষ তো রেলে ছড়বে না। তারা তো লঞ্চে যাতায়াত করে। তারা রেলে ছড়তে যাবে কেন? এই রেল ভায়াবেল হবে না।
সরকার প্রধান বলেন, সেতুর কাজ হয়ে গেছে। সেতু নিয়ে কথা বলে এখন পারছে না। রেলের কাজ হচ্ছে, এখন রেল নিয়ে প্রশ্ন তোলেছে তারা। যাক, আমার মনে হয়, উনাকে সকলেরই চিনে রাখা উচিত। রেলগাড়ি যখন চালু হবে, উনাকে রেলে চড়ানো উচিত। আর খালেদা জিয়া বলেছিল, জোড়াতালি দিয়ে পদ্মাসেতু বানাচ্ছে। সেতুতে যে স্প্যানগুলো বসাচ্ছে, এগুলো তার কাছে ছিল জোড়াতালি দেয়া। বলেছিল, জোড়াতালি দিয়ে পদ্মাসেতু বানাচ্ছে, ওখানে চড়া যাবে না। চড়লে ভেঙে পড়বে। আবার তার সাথে কিছু দোসররাও… তাদেরকে এখন কী করা উচিত? পদ্মা সেতুতে নিয়ে গিয়ে ওখান থেকে টুস করে নদীতে ফেলে দেয়া উচিত।
শেখ হাসিনা বলেন, আর যিনি আমাদের একটা এমডি পদের জন্য পদ্মা সেতুর মতো সেতুর টাকা বন্ধ করেছে তাকেও আবার পদ্মা নদীতে নিয়ে দুইটা চুবানি দিয়ে উঠাইয়া নেয়া উচিত। মরে যাতে না যায়।তাহলে যদি এদের শিক্ষা হয়। বড় বড় অর্থনীতিবিদ, জ্ঞানী-গুণি এই ধরনের অবার্চিনের মতো কথা বলে কীভাবে? সেটাই আমার প্রশ্ন। মেগা প্রজেক্টগুলো করে নাকি খুব ভুল করছি। তারা আয়েশে বসে থাকে আর আমার তৈরি করা সব টেলিভিশনে গিয়ে কথা বলে। বিদ্যুৎ সরবরাহ করি। সেই বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আজকে যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপন করেছি সেটা নিয়েও সমালোচনা, এত টাকা দিয়ে স্যাটেলাইট করে কী হবে? এই প্রশ্নও কিন্তু তুলেছে তারা। অর্থাৎ বাংলাদেশের জন্য ভালো কিছু করলে তাদের গায়ে লাগে। কেন? তাহলে তারা কি এখনও সেই পাকিস্তানি সামরিক জান্তাদের পদলেহনকারী, খোশামদী, তোষামদির দল? গালি-টালি দেই না, দেয়ার রুচিও নাই। তবে একটু না বলে পারি না যে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেভাবে বাংলাদেশের মেয়েদের ওপর অত্যাচার করেছে, গণহত্যা চালিয়েছে, অগ্নিসংযোগ করেছে, পোড়ামাটি নীতি নিয়ে বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। সেই পাকিস্তানিদের পদলেহনকারী দল বাংলাদেশে এখনও জীবিত। এটাই হচ্ছে দুঃখজনক। এরা এখনও বাংলাদেশের ভালো কিছু হলে দেখে না। বাংলাদেশ এগিয়ে গেলে তাদের ভালো লাগে না।
শেখ হাসিনার বক্তব্যের পরে গরীব, দুঃস্থ ও অসহায়দের মধ্যে সেলাই মেশিনসহ ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন আওয়ামী লীগ নেতারা।