ঢাকা: দেশের খোলা বাজারে ডলারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বাজারের চাহিদা অনুযায়ী ডলার সরবরাহ করতে পারছে না মানিএক্সচেঞ্জগুলো।
সে কারণেই প্রতি দিনই দর বাড়ছে। এক দিনের ব্যবধানে খোলা বাজারে মার্কিন ডলারের দাম ৪ টাকা বেড়ে ১০২ টাকা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ মে) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মানি এক্সচেঞ্জে প্রতি ডলার সর্বোচ্চ ১০২ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। সোমবার খোলাবাজারে প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য ৯৬ থেকে ৯৮ টাকা থাকলেও মঙ্গলবার ডলারের দাম ১০২ পার করেছে।
পুরান ঢাকার শাঁখারি বাজার এলাকার এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো থেকে জানা গেছে, এখন ১০২ ডলার টাকায় পাওয়া গেলেও হয়তো বুধবার দাম আরও বেড়ে যাবে। কারণ, এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো চাহিদা অনুযায়ী ডলার পাচ্ছে না। এছাড়া সামনে হজ মৌসুম আসছে, আরও দাম বাড়বে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে খোলা মার্কেটের ডলার ব্যবসায়ী জানান, আমরা ডলার পাচ্ছি না। আজ আমি এক ডলারও কিনতে পারিনি। তাই কোনো ডলার বিক্রিও করতে পারছি না। যারা বিদেশ যাচ্ছেন, তাদের কাছে এখন নগদ ডলারের প্রচুর চাহিদা।
জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমছে। সোমবার বড় দরপতন হয়। এক দিনেই আমেরিকান ডলারের বিপরীতে ৮০ পয়সা দর হারায় টাকা। দেশের ইতিহাসে এর আগে কখনই এক দিনে টাকার এত বড় দরপতন হয়নি। চাহিদা বৃদ্ধি ও সরবরাহ সংকটের কারণে এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাংলাদেশ ব্যাংক সোমবার মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মান আবার কমায়। প্রতি মার্কিন ডলারের বিনিময় মূল্য ৮০ পয়সা বাড়িয়ে ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। গত জানুয়ারি মাসের শুরুতে ডলারের বিনিময় মূল্য ২০ পয়সা বাড়িয়ে ৮৬ টাকা করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। সর্বশেষ ৯ মে ডলারের বিনিময় মূল্য ২৫ পয়সা বাড়িয়ে ৮৬ টাকা ৭০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়।
উল্লেখ্য, চলতি ২০২১-২২ এদিকে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের ১২ মে পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৫০২ কোটি (৫.০২ বিলিয়ন) ডলার বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০২০-২১ অর্থবছরে ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে সব মিলিয়ে প্রায় ৮ বিলিয়ন (৮০০ কোটি) ডলার কেনে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৫ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার কিনেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগে, বাজার স্থিতিশীল রাখতে গত অর্থবছরে ডলার কেনায় রেকর্ড গড়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।