কলকাতা: বাংলাদেশের একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও একটি ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে গা ঢাকা দিয়েছিলেন। তিনি শিবশংকর হালদার নামে নিজেকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতেন।
বানিয়ে ফেলেছিলেন ভারতীয় ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, প্যান কার্ড, রেশন কার্ড সহ বিভিন্ন ভারতীয় নথি।
এমনকি নিয়মিত ভোট দিতেন পশ্চিমবঙ্গে। একটি সরকারি চাকরিতেও নিযুক্ত ছিলেন তিনি। অপরদিকে পি কে হালদারের আরেক পার্টনার সুকুমার মিদ্দা অশোকনগরে মাছ ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। হুন্ডির মাধ্যমে অবৈধ কোটি কোটি টাকা পশ্চিমবঙ্গে নিয়ে আসেন তারা।
এই টাকার মাধ্যমেই প্রশান্ত কুমার এবং সুকুমার মিদ্দা, ভারতে বানিয়ে ফেলেন একাধিক সম্পত্তি এবং বিলাসবহুল বাড়ি। যা দেখে সাধারণের মনে প্রশ্ন জাগতে থাকে। পাশাপাশি ভারতের আর্থিক কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দপ্তর, এনফর্সমেন্ট ডিরেক্টর অর্থাৎ ইডি সম্পূর্ণ বিষয়টাই গোপনে নজর রাখছিল। এরপর শুক্রবার (১৩ মে) সকাল থেকেই পশ্চিমবঙ্গের নয়টি জায়গায় তল্লাশি শুরু করে ইডি।
জানা যায়, উত্তর ২৪ পরগনা সহ, কলকাতা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার একাধিক এলাকায় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি আছে এদের। ওই দিন রাত ১টা অব্দি বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে এবং আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে, ইডি সন্ধান পায় পি কে হালদারের।
এরপর শনিবার (১৪ মে) দুপুরে উত্তর ২৪ পরগনা থেকে পি কে হালদার এবং তার পরিবারের কয়েকজনকে গ্রেফতার করে ইডি। তাদের নিয়ে আসা হয় বিধান নগর সিজিও কম্প্লেক্স।
ইডির তরফে জানানো হয়েছে, এক নারীসহ ৬ জন পুরুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে ইডি যেসব সম্পত্তির খোঁজ পেয়েছে সেই সব সম্পত্তি শুক্রবার রাতেই সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে এই সব সম্পত্তি সমপরিমাণ অর্থ পাঠানো হতে পারে বাংলাদেশে। তবে কি উপায়ে যাবে সেই অর্থ তাই এখন দেখার।
তবে ভারত-বাংলাদেশ বন্দি প্রত্যাবর্তনে কিছু সমস্যা আছে। এর আগেও বাংলাদেশি আসামি ভারত থেকে পাঠাতে নানা সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে বাংলাদেশ সরকার যখন পি কে হালদারকে ফেরত চাইছে তথন সহজ কোনো উপায় খোঁজা হবে। সেক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের মাধ্যমে কোর্টে চালান করা হবে। এরপর বাংলাদেশ মিশনের সহযোগিতায় সম্ভবত বাংলাদেশে পাঠানো হবে প্রশান্ত কুমার হালদারকে।
তবে ভারতীয় নাগরিকত্ব জালিয়াতির কারণে এই মামলায় ভারত থেকে সহজে ছাড়া পাবে না পি কে।