সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ মোকাবেলায় কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে অবস্থিত উদ্বাস্তু ক্যাম্পগুলোতে বসবাসরত মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা, ভূমিধস ও ক্ষয়ক্ষতি কমাতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
প্রতিটি ক্যাম্পে কন্ট্রোল রুম স্থাপনের নির্দেশনাসহ ৯টি কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়।
শুক্রবার (৬ মে) প্রকাশিত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মিকন তংচ্যগ্যা স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘যে সকল পাহাড়ের উপর ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতায় তাদেরকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করতে হবে।’
পাশাপাশি কন্ট্রোল রুম স্থাপনের নির্দেশনা দিয়ে প্রত্যেক ক্যাম্পে স্থাপিত কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির ফোন নম্বর সবাইকে জানিয়ে দিতে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া নিরাপত্তার লক্ষ্যে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করা, জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে মোবাইল টিম প্রস্তুত, শেল্টারের ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতে শেল্টার সংশ্লিষ্ট সংস্থার সাথে আলোচনাক্রমে ঘূর্ণিঝড় সহনীয় শেল্টার কিট বিতরণে ব্যবস্থা গ্রহণ, দুর্যোগকালীন সময়ে জরুরি খাবার বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান, ক্যাম্পে অবস্থিত স্লোপ প্রোটেকশন, রিটেইনিং ওয়াল, গাইড ওয়াল মেরামত প্রয়োজন হলে জরুরি ভিত্তিতে মেরামতের উদ্যোগ গ্রহণ করা, বৃষ্টি ও বন্যার পানি নিরাপদে নিষ্কাশনের জন্য ক্যাম্পের ভেতরের ড্রেনসগুলো পরিষ্কারের ব্যবস্থা করা এবং ক্যাম্পে কর্মরত সিপিপি, ডিআরআর স্বেচ্ছাসেবকদের দুর্যোগকালীন প্রস্তুতি ও দুর্যোগ পরবর্তী প্রস্তুতি বিষয়ে বিভিন্ন সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসাইন সজীব বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় অশনি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি’র (সিপিপি) স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে সমন্বয় সভা করা হয়েছে। একই সাথে উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করা হচ্ছে।’
এদিকে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী ১০ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে বাংলাদেশের পশ্চিম অথবা পূর্বাঞ্চলের উপকূলে ঘূর্ণিঝড় অশনি আঘাত হানতে পারে।
এ প্রসঙ্গে আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ মো: শাহীনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, শুক্রবার সকালে আন্দামান সাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এটি পরিবর্তিত হয়ে পরিণত হবে গভীর লঘুচাপে। পরে নিম্নচাপ ও গভীর নিম্নচাপের পর এটি ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’র রূপ নেবে। এখন পর্যন্ত লঘুচাপটি বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যার দিকে মুখ করে আছে।
লঘুচাপটির গতিপথ বারবার বদলাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এজন্য বলা মুশকিল, এটি তৈরি হলেও আসলে কোনদিকে যাবে। তবে প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী এটি বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যায় আঘাত হানতে পারে বলে জানান এই আবহাওয়াবিদ।