শ্রীলঙ্কায় সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী দলের অনাস্থা প্রস্তাব

Slider সারাবিশ্ব


শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে ও তার মন্ত্রিপরিষদকে উৎখাতে অনাস্থার ঘোষণা দিয়েছে দেশটির প্রধান বিরোধীদল। এতে নাগরিকদের শালীন মানসম্মত জীবন নিশ্চিত করে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার অভিযোগ আনা হয়েছে।

বর্তমানে দ্বীপরাষ্ট্রটিতে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকট চলছে। বিরোধী নেতা সাজিথ প্রেমদাসার নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড পিপলস ফোর্স পার্টির একদল পার্লামেন্ট সদস্য অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছেন।
মঙ্গলবার পার্লামেন্টের স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবিওয়ারদেনার কাছে অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। মাহিন্দা রাজপক্ষে ও তার বড়ভাই প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগ দাবিতে দেশজুড়ে বিক্ষোভ চলছে। বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের জন্য তাদের দায়ী করা হচ্ছে।

রাজাপক্ষে ও তার মন্ত্রিসভাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ২৫৫ আসনের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট দরকার পড়বে। দ্য ইউনাইটেড পিপলস ফোর্স কেবল ৫৪টি আসনের ওপর নির্ভর করতে পারে। এছাড়া কিছু ছোট দল ও ক্ষমতাসীন শ্রীলঙ্কা পিপলস ফ্রন্ট পার্টির দলত্যাগীদের ভোটও প্রত্যাশা করতে পারে তারা।

অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ক্ষমতাসীনদের আধিপত্যে যেমন ভাটা পড়েছে, তেমনই এই মুহূর্তে বড় একটা সংখ্যক আইনপ্রণেতার দলত্যাগও সম্ভব। বুধবার পার্লামেন্ট সদস্যদের বৈঠক শুরু হওয়ার পর কখন অনাস্থা ভোট অনুষ্ঠিত হতে পারে; তা জানা সম্ভব হবে।

এরআগে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব দিয়েছিল দ্য ইউনাইটেড পিপলস ফোর্স। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ আইনপ্রণেতারা তার বিরুদ্ধে ভোট দিলে তাকে মসনদচ্যুত করা যাবে না।

দেউলিয়া হওয়ার পথে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। সম্প্রতি বিদেশি ঋণ পরিশোধ বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছে দ্বীপরাষ্ট্রটি। দক্ষিণ এশীয় দেশটির আড়াই হাজার কোটি মার্কিন ডলার ঋণের মধ্যে ৭০০ কোটি চলতি বছরেই শোধ করার কথা রয়েছে।

বাকিটা ২০২৬ সালের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। বর্তমানে ১০০ কোটিরও কম বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রয়েছে তাদের।

বিদেশি মুদ্রার সংকটে লঙ্কানদের আমদানি সীমিত হয়ে এসেছে। এতে জ্বালানি, রান্নার গ্যাস, ওষুধ ও খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপাতির ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

কোনো কিছু কিনতে হলে লোকজনকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। কেউ কেউ সামান্য কিছু নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। অর্থাৎ প্রয়োজনমতো সবকিছু তারা কিনতে পারছেন না। এতে সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

অনাস্থা ভোটের অভিযোগে অতিরিক্ত মাত্রায় টাকা ছাপানো, সম্পূর্ণ অর্গানিক উৎপাদনে রাসায়নিক সার নিষিদ্ধ করে কৃষিকে ক্ষতিগ্রস্থ করা ও সময়মতো মহামারি করোনার টিকা সরবরাহ করতে না-পারার কথা বলা হয়েছে।

প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের প্রবেশপথ বন্ধ রেখে বিক্ষোভের ২৫ দিন পূর্ণ হয়েছে মঙ্গলবার। গেল দুদশক ধরে শ্রীলঙ্কাকে শাসন করা রাজপক্ষে পরিবারের সদস্যদের পদত্যাগ চেয়ে তারা আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *