ঈদের সময় অতিরিক্ত আট হাজার কোটি টাকা পরিবহন মালিক ও চাঁদাবাজরা লুটে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এই দাবির পক্ষে একটি হিসেবও দিয়েছে সংগঠনটি। তবে, পরিবহন মালিকরা বলছেন ভিন্নকথা।
অতিরিক্তি ভাড়া হিসেবে সড়ক, নৌ এবং আকাশপথে এই টাকা নেয়া হচ্ছে। তবে পরিবহন মালিকদের দাবি, তারা কোনো অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছেন না। আগে তারা প্রকৃত ভাড়ার চেয়ে কম নিতেন। আর এখন ঈদের সময় প্রকৃত ভাড়া নেয়ায় যাত্রীদের কাছে ভাড়া বেশি মনে হচ্ছে।
এদিকে, যাত্রী কল্যাণ সমিতি ঈদযাত্রার বাড়ি যাওয়া এবং ফিরে আসার সময় অর্থাৎ ২৫ এপ্রিল থেকে ১০ মে, এই ১৫ দিন যাতায়াত বিবেচনায় নিয়ে এই হিসেব করেছে। সব ধরনের যানবাহন মিলিয়ে এ সময়ে তারা ৬০ কোটি ট্রিপ হবে বলে ধরে নিয়েছেন। ট্রিপ বলতে বোঝানো হচ্ছে, একজন যাত্রী এই সময়ের মধ্যে যতবার যানবাহন ব্যবহার করবেন তার ততটি ট্রিপ হবে।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, এই ৬০ কোটি ট্রিপের মধ্যে সড়কপথে হবে ৪০ কোটি এবং ট্রেন, বাস ও বিমানে হবে ২০ কোটি ট্রিপ। তার কথা, এই সময়ে বিভিন্ন যানবাহনে ৩০ হাজার কোটি টাকা ভাড়া আদায় হচ্ছে। তার মধ্যে আট হাজার কোটি টাকা আদায় করা হচ্ছে অন্যায়ভাবে।
তিনি দাবি করেন, সড়কপথে বাসসহ বিভিন্ন যানবাহনে প্রতি ট্রিপে গড়ে যদি অতিরিক্ত ১০০ টাকা করে নেয়া হয় তাহলে তার পরিমাণ চার হাজার কোটি টাকা। আর লঞ্চ, ট্রেন ও বিমানে যদি গড়ে প্রতি ট্রিপে ২০০ টাকা অতিরিক্ত নেয়া হয় তাহলে সেখানে চার হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত নেয়া হচ্ছে। এই মোট আট হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত নেয়া হচ্ছে।
তার অভিযোগ, বাসে এখন দেড় থেকে দুই গুণ পর্যন্ত বেশি ভাড়া নেয়া হচ্ছে। আকাশপথে এই বাড়তি ভাড়ার পরিমাণ আড়াইগুণ পর্যন্ত। রেলের টিকিট চলে যাওয়ায় যাত্রীদের প্রকৃত ভাড়ার চেয়ে দুই গুণেরও বেশি দামে টিকিট কিনতে হয়েছে।
চৌধুরী বলেন, আর লঞ্চে এখন ডেকের প্রতিজন যাত্রীর কাছ থেকে কয়েক শ’ টাকা বেশি নেয়া হচ্ছে। দুই হাজার পাঁচ শ’ টাকার ডাবল বেডের কেবিন ভাড়া এখন তিন হাজার পাঁচ শ’ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। আকাশপথে আড়াই গুণ পর্যন্ত বেশি ভাড়া নেয়া হচ্ছে।
এদিকে, তার এই বক্তব্যে সত্যতা বাস্তবেও পাওয়া যাচ্ছে।
ঢাকা থেকে চুয়াডাঙ্গা, বগুড়া, রাজশাহী, নওগাঁ, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রামসহ উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের প্রতিটি রুটে যাত্রী প্রতি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা হারে বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
যেমন ঢাকা-বরিশাল রুটে লঞ্চে এক বেডের কেবিন ভাড়া ছিল এক হাজার দুই শ’ টাকা। এখন নেয়া হচ্ছে এক হাজার ছয় শ’ টাকা।