ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষ পূর্বপরিকল্পিত এবং এ সংঘাত ছড়িয়ে দিতে তৃতীয় পক্ষের ইন্ধন ছিল বলে দাবি করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তিনি বলেন, ‘তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এতবড় সংঘাত। তার জন্য মূলত ওই তৃতীয় পক্ষই দায়ী। ঘটনার পেছনে পূর্বপরিকল্পনা ছিল।’
শুক্রবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে চাঁদপুর সার্কিট হাউসে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, নিউমার্কেটে ফাস্টফুডের যে দোকানি তাদের রাজনৈতিক পরিচয় জানা গেছে। নিজেদের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনা, শিক্ষার্থীদের এনে তার ব্যাপকতা ছড়িয়ে একটা অরাজকতার পরিবেশ তৈরি করেছে। সুতরাং কোনো অবস্থাতেই এদের ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। গোটা পরিস্থিতি নিয়ে সরকার বেশ সজাগ রয়েছে।
নিউমার্কেট ও এর আশপাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতর সামনে। এখনই তাদের ব্যবসা করার সময়। তাছাড়া বিগত দুই বছর করোনার কারণে ব্যবসায়ীদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। তা বিবেচনায় নিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এসময় তিনি জানান, নিউমার্কেটে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত দুজনের পরিবারের পাশে দাঁড়াবে সরকার। আর যেই দুইজন মারা গেছেন, তারা ঘটনায় জড়িত ছিলেন না বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী পরে সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে কৃষকদের মাঝে কৃষি উপকরণ সামগ্রি বিতরণ করেন। এসময় জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ, পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়, কৃষি বিভাগের উপপরিচালক জালাল উদ্দিন, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম দেওয়ান, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, দুই দোকানের কর্মীদের বিরোধের জেরে গত সোমবার (১৮ এপ্রিল) রাত ১২টার দিকে নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ হয়। মধ্যরাতে দু-পক্ষকে ওই এলাকা থেকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
এরপর মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) সকালে দ্বিতীয় দফায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান নিলে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। সকাল সাড়ে ১০টার পর নীলক্ষেত মোড়-সায়েন্স ল্যাব এলাকায় থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। সন্ধ্যার পরও ঢাকা কলেজ ও নিউমার্কেটসহ আশপাশের এলাকায় চরম উত্তেজনা দেখা যায়।
দুদিনের সংঘর্ষে বিভিন্ন গণমাধ্যমের ১১ সাংবাদিক, ঢাকা কলেজের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী এবং ২৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষের ঘটনায় নাহিদ (১৮) নামের এক কুরিয়ার সার্ভিসকর্মী মঙ্গলবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) ভোর ৪টা ৩৬ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সংঘর্ষে আহত আরেক দোকান কর্মচারী মুরসালিন (২৬)।