দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক প্রার্থীর অংশগ্রহণে ৪৫ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা আজ শুক্রবার (২২ এপ্রিল) শুরু হচ্ছে। আবেদনকারী নিজ নিজ জেলায় বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তিন ধাপে ঢাকার পাশাপাশি জেলায় জেলায় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন ১৩ লাখ ৯ হাজার ৪৬১ জন পরীক্ষার্থী।
প্রথম ধাপে আজ শুক্রবার ঢাকাসহ ২২টি জেলার বিভিন্ন উপজেলার প্রার্থীদের পরীক্ষা আজ শুরু হচ্ছে। এরমধ্যে ১৪টি জেলার সব উপজেলা এবং ৮টি জেলার কয়েকটি উপজেলায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এ পরীক্ষা। প্রথম ধাপে ৩ লাখ ৯৬ হাজার ৭৬৪ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবেন।
আগামী ২০ মে দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে ৪ লাখ ৮৪ হাজার ৭২৫ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবেন। ধাপে ৩০ জেলার বিভিন্ন উপজেলার প্রার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া হবে।
এছাড়া তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা নেওয়ার কথা রয়েছে আগামী ৩ জুন। তৃতীয় ধাপে ৪ লাখ ২৭ হাজার ৯৭৩ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবেন। এ ধাপে ৩১ জেলার বিভিন্ন উপজেলার পার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া হবে।
এবার একটি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী ২৯ জন। পরীক্ষা কেন্দ্র করে জালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথা জানিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর।
এদিকে নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের বিষয়ে সতর্কতামূলক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই)। এতে বলা হয়েছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করা হয়। কেউ অর্থের বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখালে তাকে নিকটস্থ থানায় সোপর্দ করুন।
এছাড়া, ডিপিই থেকে পরীক্ষার্থীদের ১৯টি সাধারণ নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনাগুলো হলো-
১. লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য এই প্রবেশপত্র ও জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে আনতে হবে।
২. পরীক্ষা শুরু হওয়ার ১ এক ঘণ্টা আগে প্রার্থীকে নির্ধারিত আসন গ্রহণ করতে হবে এবং পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কক্ষ ত্যাগ করতে পারবেন না।
৩. প্রবেশপত্র ব্যতিরেকে কোনো পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে না। পরীক্ষা কেন্দ্রে কোনো বই, উত্তরপত্র, নোট বা অন্য কোনো কাগজপত্র, ক্যালকুলেটর, মোবাইল ফোন, ভ্যানিটি ব্যাগ, পার্স, হাতঘড়ি বা খড়ি জাতীয় বস্তু, ইলেকট্রনিক্স হাত ঘড়ি বা যেকোনো ধরনের ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস, যোগাযোগ যন্ত্র বা এই জাতীয় বস্তু সঙ্গে নিয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। যদি কোনো পরীক্ষার্থী উল্লিখিত দ্রব্যাদি সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করে, তবে তাকে তাৎক্ষণিক বহিষ্কারসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৪. পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা কক্ষে অবস্থানের সময় অবশ্যই উভয় কান উন্মুক্ত রাখতে হবে।
৫. আবেদনপত্রে পরীক্ষার্থীর প্রদত্ত ছবি হাজিরা শিটে থাকবে এবং ইনভিজিলেটর এই ছবি দিয়ে পরীক্ষার্থীকে যাচাই করবেন। ভুয়া পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৬. আবেদনপত্রে প্রার্থীর দেওয়া স্বাক্ষরের সঙ্গে পরীক্ষার হাজিরা শিটে এবং ওএমআর শিটে দেওয়া স্বাক্ষরসহ সব তথ্যে মিল থাকতে হবে।
৭. পরীক্ষার্থীকে উত্তরপত্রে অবশ্যই কালো বল পয়েন্ট কলম ব্যবহার করতে হবে।
৮. একজন পরীক্ষার্থীর জন্য ওএমআর ফরমের সেট কোড পূর্বনির্ধারিত থাকবে, পরীক্ষার্থীর জন্য নির্ধারিত ওএমআর ফরমের সেট কোডটি প্রবেশপত্রে উল্লেখ করা আছে।
৯. পরীক্ষার হলে যে ওএমআর ফরমটি দেওয়া হবে, সেখানে সেট কোডের ঘরে প্রবেশপত্রে উল্লিখিত কোডটির বিপরীতে বৃত্ত ভরাট করতে হবে।
১০. পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রের সেট কোডগুলো এবং ওএমআর ফরমের সেট কোড ভিন্ন হবে। পরীক্ষার্থীর ওএমআর সেট কোড এর বিপরীতে কোন সেট কোডের প্রশ্ন পাবেন, তা পরীক্ষা শুরু হওয়ার পাঁচ মিনিট আগে কক্ষ পরিদর্শক জানিয়ে দেবেন।
১১. প্রবেশপত্রে নির্ধারিত ওএমআর-এর সেট কোড ছাড়া অন্য সেট কোডে পরীক্ষা দিলে উত্তরটি বাতিল বলে গণ্য হবে।
১২. রোল বা সেট কোড এর বৃত্ত পূরণে কোনো ভুল হলে উত্তরপত্রটি বাতিল বলে গণ্য হবে।
১৩. হাজিরা শিটের সঠিক স্থানে পরীক্ষার্থীকে স্বাক্ষর করতে হবে এবং হাজিরা বৃত্তটি পূরণ করতে হবে। তা না হলে উত্তরপত্রটি বাতিল বলে গণ্য হবে।
১৪. ওএমআর ফরমের উপরিভাগের নির্ধারিত সব টেক্সট বক্স নির্দেশনা অনুযায়ী পূরণ করতে হবে, অন্যথায় উত্তরপত্রটি বাতিল বলে গণ্য হবে।
১৫. পরীক্ষা কেন্দ্রের ভেতরে আপনার আসন কোন কক্ষে তার তালিকা টানিয়ে দেওয়া হবে।
১৬. লিখিত পরীক্ষায় বা মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ চাকরির নিশ্চয়তা দেয় না।
১৭. চূড়ান্ত ফলাফলে প্রতিটি উপজেলা/শিক্ষা থানার জন্য নিয়োগযোগ্য মেধাতালিকা ছাড়া কোনো অপেক্ষমাণ তালিকা/প্যানেল প্রস্তুত করা হবে না।
১৮. লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার নম্বর প্রকাশ করা হবে না।
১৯. পরীক্ষার সব তথ্য অধিদফতরের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।