রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকার দোকানগুলো দ্রুতই খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নিউমার্কেট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন। আজ বুধবার শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনার পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। ঢাকা কলেজের প্রশাসনকে নিয়ে আমরা কমিটি গঠন করবো। যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র এই ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ভবিষ্যতে আর না ঘটে। তদন্ত কমিটি গঠন করে যারা দোষী তাদের চিহ্নিত করবো। আজ এখনই দুই পক্ষের আলোচনার মধ্যে দোকান খোলা হবে। তিনি আরও বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন বিষয়টি মীমাংসা করবেন। এই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে উদ্ভুত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তার নিরপেক্ষ তদন্তের ভিত্তিতে ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
আমরা নিউমার্কেট এলাকার দোকান মালিক এবং কর্মচারীদের ছাত্রদের উদ্দেশ্য কোন উস্কানিমূলক কথা না বলার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।
পাশাপাশি ছাত্রদের শিক্ষক ভাইদেরকেও সহনশীল আচরণ করার জন্য অনুরোধ করছি।
এদিকে সাত কলেজ আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা আজ দুপুরে নীলক্ষেত মোড়ে তাদের এক মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তারসহ চার দফা দাবির কথা জানিয়েছেন।
সাত কলেজ আন্দোলনের প্রাধান সমন্বয়ক ইসমাইল সম্রাট বলেন, আমরা চার দফা দাবি নিয়ে এখানে দাঁড়িয়েছি। শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারীরা সন্ত্রাসীদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে। সেইসঙ্গে আহতদের সকল চিকিৎসা খরচ বহন করতে হবে। হলে ক্যাম্পাস খোলা রেখে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ অব্যাহত রাখতে হবে। হামলাকারী এডিসি হারুন সাহেবকে প্রত্যাহার করতে হবে। সাংবাদিকদের উপর হামলাকারীদের চিহ্নিত করে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আইনের আওতায় আনতে হবে।
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে গতকালও চলছিল দফায় দফায় সংঘর্ষ। পুরো এলাকা জুড়ে ছিল রণক্ষেত্র। তবে এরআগে সরজমিন দেখা যায়, আজ বুধবার সকাল থেকে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও দোকানপাট খুলছে না ব্যবসায়ীরা। কিছুটা স্বস্তি ফিরে পেয়েছে সাধারণ মানুষ। ভয়ে, আতঙ্কে তারা মার্কেটের মধ্যে অবস্থান করছে। নিউমার্কেট-এর আশপাশের কোন দোকানই এখনও পর্যন্ত খোলেনি। বিভিন্ন দোকানের ব্যবসায়ী এবং কর্মীরা মার্কেটের ভিতরে এবং কেউ কেউ বাইরে অবস্থান করছেন।
ঢাকা কলেজের আশপাশ, নিউমার্কেট এবং বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। যাত্রী, যানবাহানের চালক, এবং পথচারীদের কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও সবার মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এদিকে সকাল ১১টার সময় ঢাকা কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন কর্মসূচির কথা থাকলেও দুপুর ১টা পর্যন্ত তা এখনও শুরু হয়নি। তবে সাত কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী নীলক্ষেত মোড়ে মানববন্ধনে তাদের চারদফা দাবির কথা জানিয়েছেন। ব্যবসায়ীরা অনেকে জানিয়েছেন, আজও যদি সহিংসতা হয় তাহলে যানজটের কারণে আরও ভোগান্তি বেড়ে যাবে। গত দুদিনের ঘটনা দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে শেষ করে ফেলা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের নিরাপত্তা কর্মী আরমান জানান, আজ দোকানপাট খোলার সম্ভবনা কম। সবাই মার্কেটের মধ্যে অবস্থান করছে। আতঙ্ক বা প্রাণনাশের ভয়ে কেউ দোকানপাট খুলছে না। এদের নিরাপত্তা কে দিবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ট্রাফিক লালবাগ বিভাগের সহকারী কমিশনার জয়ীতা দাস বলেন, সকাল থেকেই যান চলাচল স্বাভাবিক। কোথাও কোনো আন্দোলন দেখা যায়নি। নির্বিঘ্নে যানচলাচল করছে। তবে মার্কেটগুলো এখনো বন্ধ আছে।