ফিলিস্তিনের অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে পবিত্র আল-আকসা মসজিদে আবারও হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি পুলিশ। এ সময় পুলিশ ও ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। রোববার (১৭ এপ্রিল) এ হামলায় অন্তত ১৯ ফিলিস্তিনি আহত হন। এর দুই দিন আগে গত শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) ভোরে মসজিদে অভিযান চালিয়ে কয়েকশ’ ফিলিস্তিনিকে গ্রেফতার করে ইসরাইলি বাহিনী।
আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, রোববার ফজরের নামাজের সময় মসজিদ প্রাঙ্গণে পুলিশ অভিযান শুরু করলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। উভয়ের মধ্যে হাতাহাতি হয়। বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে গ্রেফতারও করা হয়। এ বিষয়ে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ বলেছে, এদিন ফিলিস্তিনিরা মসজিদে পাথর মজুত করে রেখেছিল। তারা ইসরাইলি ইহুদিদের মসজিদে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়ার জন্য ব্যারিকেড দিয়েছিল। এ কারণে ইসরাইলি পুলিশ আল-আকসা মসজিদে প্রবেশ করে।
তবে ইসরাইলি পুলিশ স্বীকার করেছে, তারা অধিকাংশ ফিলিস্তিনি মুসল্লিকে আল-আকসা মসজিদ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। তবে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি তখনও মসজিদে ছিলেন। ইসরাইলি পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় তারা ৯ ফিলিস্তিনিকে গ্রেফতার করেছে।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা জানিয়েছেন, ইসরাইলি পুলিশের আক্রমণে কমপক্ষে ১৭ ফিলিস্তিনি মুসল্লি আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এসব গুরুতর আহতদের বেধড়ক মারধর করা হয়েছে এবং রাবার বুলেট দিয়ে আঘাত করা হয়েছে।
ফিলিস্তিনের রেড ক্রস জানিয়েছে, আহত ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের চিকিৎসা দিতে যাওয়ার সময় বাধা দেয় ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ। তাদের মসজিদে প্রবেশ করতে দেয়নি। তবে বাব আল-আসবাতে গিয়ে তারা আহত ফিলিস্তিনিদের সেবা করেছেন।
আগের বছরগুলোর মতোই এবার রমজানের শুরু থেকেই আল-আকসায় উত্তেজনা শুরু হয়। এর মধ্যেই শুক্রবার ফজরের নামাজের সময় কয়েক হাজার মুসল্লি আল-আকসা মসজিদে যান। ইহুদি দর্শনার্থীদের চলাচলের পথ করে দিতে সে সময় মুসল্লিদের বেধড়ক পেটায় ইসরাইলি পুলিশ। এতে আহত হন অন্তত ১৫৮ জন, আটক হন ৩০০ ফিলিস্তিনি।
ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট আরও জানায়, ঘটনাস্থলে অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসকদের যেতেও বাধা দেয় ইসরাইলি বাহিনী। ৬৭ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতলে নেওয়া হয়। মসজিদে ইসরাইলি বাহিনীর এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। আল-আকসা প্রাঙ্গণে ইসরাইলি পুলিশের হামলাকে ‘যুদ্ধের ঘোষণা’ হিসেবে দেখছে ফিলিস্তিনিরা।