রাজধানীর উত্তর মুগদায় ১০ মাস ধরে ‘গৃহবন্দি’ থাকা ১৯ বছর বয়সী বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত সেই কানাডিয়ান তরুণীকে দেশটির সরকারের প্রতিনিধিদের হাতে তুলে দিয়েছেন হাইকোর্ট। রোববার (১৭ এপ্রিল) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
এ রায়ের ফলে যাবতীয় আইনি প্রক্রিয়া শেষে কানাডায় ফিরে যেতে পারবেন ওই তরুণী।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন। আদালতে তরুণীর বাবা ছাড়াও কানাডিয়ান হাইকমিশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ৫ এপ্রিল বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) এর করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ১০ এপ্রিল কানাডিয়ান ওই তরুণী ও তার বাবা-মাকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। মুগদা থানার পুলিশকে তার বাবা-মা ও তরুণীকে হাজির করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
একইসঙ্গে ১৯ বছরের তরুণীর অসম্মতিতে তাকে ১০ মাস ধরে আটক রাখা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।
রিট সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশি বাবা-মায়ের ওই সন্তানের জন্ম কানাডায়। ১৯ বছরের ওই তরুণী কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। ১০ মাস আগে তার বাবা-মা বেড়ানোর কথা বলে তাকে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। এরপর ওই তরুণী কানাডায় ফিরে যেতে চাইলেও তাকে যেতে দেওয়া হয়নি।
রিট আবেদনে বলা হয়েছিল, তরুণীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে তাকে তার নানি ও মা সব সময় বাসায় তালাবদ্ধ করে রাখেন। এক পর্যায়ে ওই তরুণী ল্যান্ডফোনে কানাডা সরকার ও ঢাকার কানাডিয়ান হাই কমিশনকে জানান, গত ১০ মাস এভাবে তাকে জোরপূর্বক ঘরবন্দি করে রাখা হয়েছে। এ সময় ওই তরুণী কানাডায় ফিরে যাওয়ার ইচ্ছার কথাও জানান।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মুগদা থানায় কানাডিয়ান হাইকমিশন থেকে সাধারণ ডায়েরি করা হয়। তারপর কানাডিয়ান হাই কমিশনের পক্ষে মানবাধিকার সংগঠন ব্লাস্ট হাইকোর্টে রিট আবেদন করে।
রিটে পুলিশের আইজি, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, মুগদা থানার ওসি এবং ওই তরুণীর বাবা-মাকে বিবাদী করা হয়।