ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ও লভিভে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান। কৃষ্ণসাগরে বিস্ফোরণে রুশ রণতরী ডুবে যাওয়ার পর শনিবার (১৬ এপ্রিল) প্রতিবেশী দেশটির শহরগুলোতে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা অব্যাহত রেখেছে মস্কো। খবর রয়টার্স ও আরটির।
কিয়েভের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় দারনিস্কি জেলায় বড় বিস্ফোরণের পর ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে। মস্কো বলছে, ট্যাংক মেরামত করা একটি কারখানায় এই হামলা চালানো হয়েছে। কিয়েভের মেয়র বলছেন, উদ্ধারকারী ও চিকিৎসাকর্মীরা কাজ করছেন। এর বাইরে তার কাছে কোনো তথ্য নেই।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী বলেছে, বেলারুশ থেকে উড়ে এসে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান পোল্যান্ডের সীমান্তের কাছে লাভিভ শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। সেখানে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে চারটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
রাশিয়ার দাবি, মিকোলাইভে সামরিক যান মেরামত কারখানায় তারা হামলা চালিয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তের কাছেই এই কারখানাটি ছিল।
এই হামলার আগে শুক্রবার এক ঘোষণায় রাশিয়া বলেছে, অনির্দিষ্ট নাশকতা ও সন্ত্রাসবাদের প্রতিশোধ দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বাড়ানো হবে। এর কয়েক ঘণ্টা আগে কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার রণতরী মস্কোভা ডুবে যাওয়ার খবর দিয়েছে ক্রেমলিন।
কিয়েভ ও ওয়াশিংটন বলছে, জাহাজটিতে ইউক্রেন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। অত্যাধুনিক অস্ত্রসজ্জিত একটি শত্রুযানের বিরুদ্ধে এই হামলাকে ইউক্রেনের বড় ধরনের সফলতা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
গেল ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণা দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। কিয়েভে ভয়াবহ হামলার পর সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছিল রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। এখন দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে ইউক্রেনের ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করছে তারা।
এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ থেকে কোনো কিছুই তাদের বিরত রাখতে পারবে না। ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রের চালান অব্যাহত থাকলে তাতে ‘অকল্পনীয় পরিণতির’ হুঁশিয়ারি দিয়ে ওয়াশিংটনকে কূটনৈতিক সতর্কবার্তা পাঠায় রাশিয়া।
কিন্তু নেড প্রাইস বলেন, রাশিয়া কিছু বিষয় ব্যক্তিগতভাবে বলেছে। আর তারা কিছু জিনিস প্রকাশ্যে বলেছেন। কিন্তু কোনো কিছুই আমাদের কৌশলকে নিরুৎসাহিত করতে পারবে না। ইউক্রেনের অংশীদারদের কোটি কোটি মার্কিন ডলারের সামরিক সহায়তা নিয়ে যদি রাশিয়া উদ্বিগ্ন হয়, তবে তারাও অবৈধ হামলার জন্য দায়ী।
এদিকে দোনবাস থেকে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীকে বিতাড়িত করতে অতিরিক্ত সেনা পাঠিয়েছে রাশিয়া। এর আগে ২০১৪ সালে রুশসমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অঞ্চলটির স্বাধীনতার স্বীকৃতি দিয়েছেন পুতিন। ইউক্রেন বলছে, তারা সেখানে রাশিয়ার অগ্রযাত্রা থামিয়ে দিতে পেরেছেন।