নওগাঁয় হিজাব নিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও মানহানি করার অভিযোগে দুই সাংবাদিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- স্থানীয় সাংবাদিক কিউ এম সাঈদ টিটু (৫০) ও সামসুজ্জামান মিলন (৩৮)। তারা দুজন আমোদিনী পালের করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
এর আগে সকালে মহাদেবপুর উপজেলার দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা আমোদিনী পাল পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয় মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজম উদ্দিন মাহমুদ বলেন, সকালে উপজেলার দাউল বারবাকপুর উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমোদিনী পাল বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। মামলায় তার বিরুদ্ধে হিজাব নিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, তাকে সামাজিকভাবে হেয় করা ও বেআইনিভাবে দলবদ্ধ হয়ে বিদ্যালয়ে হামলার অভিযোগ করেছেন তিনি।
এদিকে ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে হিজাব বিতর্ক ও ছাত্রীদের মারধরের অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। তদন্তে হিজাব ইস্যুর সত্যতা খুঁজে পায়নি বলে লিখিত প্রতিবেদনে জানানো হয়।
গত সোমবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মিজানুর রহমানের কাছে এ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি।
তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল মালেক। অন্য সদস্যরা হলেন-উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. হাবিবুর রহমান ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলী প্রামাণিক।
নওগাঁর মহাদেবপুরের দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়। অর্ধশত বছরের প্রাচীন এ বিদ্যালয় হঠাৎ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচিতি পেয়েছে হিজাব ইস্যু নিয়ে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অন্যান্য দিনের মতো এ বিদ্যালয়ে গত ৬ এপ্রিল নিয়মিত প্যারেড ও জাতীয় সংগীত শেষ করে। তবে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী স্কুল পোশাকে না আসায় তাদের ভৎর্সনার পাশাপাশি হাতে বেত্রাঘাত করেন শিক্ষকরা। ঘটনা মোড় নেয় ভিন্ন দিকে। এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা হিজাব পরায় বেত্রাঘাত করা হয়েছে। এরপর বৃহস্পতিবার দুপুরে বিদ্যালয়ে একদল অভিভাবক এসে ভাঙচুর চালান।
বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কোন্দল কাজে লাগাতে হিজাব ইস্যু তৈরি করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে দাবি এলাকাবাসীর।
ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত এ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন ৩৭৫ জন শিক্ষার্থী।