কুমিল্লায় বুড়িচং উপজেলায় সাংবাদিক মহিউদ্দিনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া সন্দেহভাজন আরও দু’জনকে আটক করা হয়। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
শুক্রবার সকালে গণমাধ্যমকে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মো. ফরহাদ মৃধা ও মো. পলাশ মিয়া।
উল্লেখ্য, কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ভারতীয় সীমান্তের হায়দারাবাদ এলাকায় মহিউদ্দিন সরকার নামে এক সাংবাদিক গুলিতে নিহত হন। গত বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। তিনি কুমিল্লার স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক কুমিল্লার ডাক এর স্টাফ রিপোর্টার ও আনন্দ টিভি সাবেক বি-পাড়া প্রতিনিধি। মহিউদ্দিন সরকার বি-পাড়া উপজেলার মালাপাড়া ইউনিয়নের অলুয়া গ্রামের মোশাররফ সরকারের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মহিউদ্দিন এক সহযোগীসহ মোটরসাইকেলে করে পাচোরা এলাকায় গেলে দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে। সেখান থেকে আহত অবস্থায় বিজিবি সদস্যরা মহিউদ্দিনকে উদ্ধার করে স্থানীয় রাব্বী ও রুবেল নামে দুই যুবকের মাধ্যমে বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করে।
রাত সাড়ে ১০টায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মহিউদ্দিনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া রাব্বী জানান, গুলিবিদ্ধ মহিউদ্দিনকে বিজিবির সহযোগিতায় হায়দারাবাদ নগর থেকে মোটরসাইকেলে করে শংকুচাইল বাজারে নিয়ে আসি। সেখান থেকে একটি সিএনজিতে করে বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসি।
পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মীর হোসেন বলেন, রাত সাড়ে ১০টার দিকে নাইমকে হাসপাতালে আনা হয়। তার শরীরে ৪-৫টি গুলির চিহ্ন রয়েছে। হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানান তিনি।
নিহতের পরিবার সূত্র জানিয়েছে, বুধবার রাতে সংবাদ সংগ্রহের জন্য নাইম শঙ্কুচাইল সীমান্ত এলাকায় গেলে চিহ্নিত একটি মাদক সিন্ডিকেটের সদস্যরা তাকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি করে। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি প্রাণ হারান। এর আগে নাইম ওই মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করেছিলেন। তার জেরেই তাকে হত্যা করা হতে পারে।
ওসি আলমগীর হোসেন বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। বিজিবির প্রতিনিধি, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ আমরা এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে ঘটনার কারণ উদ্ঘাটনের চেষ্টা করছি। ঘটনাটি একেবারে ভারত সীমান্তবর্তী এলাকায় হওয়ায় বিষয়টি সুক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। আমরা জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।