ঢাবি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) নববর্ষের প্রথম দিনে আনন্দ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে শোভাযাত্রাটি সকাল ৯টায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে শুরু হয়ে ভিসি চত্বরস্থ স্মৃতি চিরন্তন প্রদক্ষিণ করে টিএসসিতে এসে শেষ হয়।
এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য ছিল, ‘নির্মল করো, মঙ্গল করো মলিন মর্ম মুছায়ে।’
করোনা মহামারীর আগে মঙ্গল শোভাযাত্রা চারুকলা অনুষদ থেকে শুরু হয়ে মৎস্য ভবন ঘুরে আবার চারুকলায় এসে শেষ হতো। তবে এবার স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল ৯টার আগেই বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ টিএসসিতে জড়ো হতে শুরু করেন। নারীরা হলুদ শাড়ি আর পুরুষরা লালা পাঞ্জাবি পরে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় মাছ, পাখি, ট্যাপা, ঘোড়া, পুতুল, মুখোশ ও অন্যান্য শিল্পকর্ম শোভাযাত্রায় স্থান পায়।
শোভাযাত্রা ঘিরে নেয়া হয়েছিল পাঁচ স্তরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
শোভাযাত্রা শেষে ভিসি অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামান সম্প্রীতি, অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক সমাজ বিনির্মাণে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘দীর্ঘ দুই বছর পর পহেলা বৈশাখ-১৪২৯ অনুষ্ঠান তার প্রাণচাঞ্চল্য, উৎসব ও আমেজের চিরাচরিত ছোঁয়া ফিরে পেয়েছে বলে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। এটি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক উৎসব। এটি একটি অসাম্প্রদায়িক মানবিক চেতনায় উজ্জীবিত উৎসব। এটি সকল জনগোষ্ঠী, সম্প্রদায় ও ধর্মের মানুষের একটি প্রাণের জায়গা, সাধনার জায়গা, সম্পৃক্ততার জায়গা। ধর্ম যার যার সেটি থাকবে; কিন্তু উৎসব ও আমেজ সকলের। মানুষের মধ্যে ধর্মের সম্প্রীতি, মানবিক বন্ধন সুদৃঢ় হোক সেই প্রত্যাশা করি।’
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘বৈশ্বিক মহামারীর কারণে আমরা দুই বছর আমাদের উৎসবটি করতে পারিনি। দুই বছর পর আমরা আবার আমাদের প্রাণের মেলা, হৃদয়ের উৎসবে হাজির হয়েছি। দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান যে শত্রুর বিরুদ্ধে আমরা লড়ছি, সেই শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য এই পহেলা বৈশাখ দল, মত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের একটি উৎসবে পরিণত হয়েছে।’
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো: রহমত উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূইয়াসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।