আশিক বিন ইদ্রিছ, কালিয়াকৈর(গাজীপুর) থেকে ফিরে:গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলা একটি বৃহৎ শিল্পাঞ্চল। কালিয়াকৈর উপজেলা ও গাজীপুর মহানগরের ১৮টি ওয়ার্ড নিয়ে সংসদীয় আসন-১৯৪,গাজীপুর-১ গঠিত। এই আসনে প্রায় ৬.৬৫ লক্ষ ভোটার রয়েছে। বিগত ২০০৮ সালে ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আ ক ম মোজাম্মেল হক বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তৃণমুল পর্যায়ে দগ্ধ ও গ্রুপিং লেগেই আছে। তৎকালীন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মরহুম গাজী ছামান উদ্দিন,সাধারন সম্পাদক কামাল উদ্দিন সিকদার ও আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি এই তিন জনের ত্রিমুখী দ্বন্ধ এক সময় প্রকাশ্যে রুপ ধারন করে। দ্বন্ধের ফলে একটি হত্যাকান্ডও সংঘটিত হয়।
৯ম, ১০ম ও ১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আক ম মোজাম্মেল হক সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে দুই মেয়াদে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পালন করায় এবং আওয়ামীলীগের টানা তিনবার ক্ষমতায় থাকার ফলে সেই ত্রিমুখী দ্বদ্ধ এখন প্রকাশ্যে। এই প্রকাশ্য বিরোধিতার মুল কারন জুট ব্যবসার আধিপত্য বিস্তার ও নিয়ন্ত্রন। কালিয়াকৈর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী ছামান উদ্দিনের মৃত্যুর পর তার কনিষ্ট ছেলে রেজাউল করিম রাসেল বর্তমান উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক। তিনি ২০০৮ সালে ১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন ও বিগত ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি দলীয় মনোনয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন মন্ত্রীর প্রকাশ্যে বিরোধীতার কারনে। তার পর থেকে উপজেলা আওয়ামীলীগের দ্বন্ধ ধীরে ধীরে দ্ধগ্ধে রুপ নেয়। কামাল সিকদার মন্ত্রীর ভাতিজা মুরাদ কবীর ও মোজাম্মেল হক এমপি একত্র মিলে মিশে রাজনীতি করা সন্ভব হচ্ছেনা।
২৮ নভেম্বর পৌরসভা নির্বাচনে সাধারন সম্পাদক রাসেল আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়ে মেয়র পদে প্রতদ্বন্ধিতা করে ছয় হাজার ভোটে মন্ত্রীর লোক হিসেবে পরিচিত মুজিবর রহমানের কাছে হেরে যান মন্ত্রীর অস্পষ্ট ছায়ার ইঙ্গিতে, এমনই মনে করেন আওয়ামীলীগের ভোটাররা। গত বিজয় দিবসে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুরাদ কবীর ও সাধারন সম্পাদক রেজাউল করিম রাসেল আলাদা আলাদা কর্মসুচি নিয়ে প্রকাশে দুভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। ২০১৮ সালে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ১৮ ওয়ার্ডের সাধারন কাউন্সলিরদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কাজ করায় অন্য দলের কাউন্সিলরদের মাঝে প্রতিত্রিুয়া সৃষ্টি হয়। এ সময় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আমেরিকা ছিলেন। রাসেল বনাম মুরাদ কবীর, মুরাদ কবীর বনাম কামাল সিকদার,রাসেল বনাম সিকদার মোশারফ, সিকদার মোশারফ বনাম রফিকুল ইসলাম তুষার, আ ক ম মোজাম্মেল বনাম রাসেল দ্বদ্ধ এখন চরম পর্যায়ে, উর্ধ্বমুখী । আর প্রকাশ্যে সেই বছরই আলোর মশাল হাতে ধীর গতিতে এগিয়ে আসেন জনগনের আস্তার ঠিকানা নুরে আলম সিদ্দিকী।
বিগত একাদশ নির্বাচনে নুরে আলম সিদ্দিকী দলীয় মনোনয়ন পেতে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের হাইকমান্ডের নিকট দৌড় ঝাপে এগিয়ে রয়েছেন। সাধারন মানুষের মনে স্থান করে নিতে পেরেছেন। উপজেলা আওযামীলীগের অন্ত:দ্বদ্ধ তৃণমুল আওয়ামীলীগ একটু পরিত্রান পেতে তাকিয়ে আছেন এই আলাউদ্দিনের চেরাগের প্রতি। তৃণমুলের দীর্ঘ দিনের সুপ্ত আশা এই অন্তমুখী এবং প্রকাশ্যে কোন্দল নিরসনে কোন এক মানবিক দৈত্য রুপে নুরে আলম সিদ্দিকী হাল ধরবেন সংসদীয় আসন-১৯৪,গাজীপুর-১ আসনে , এমন আশা এখন অনেকের।
বিগত একাদশ নির্বাচনের ন্যায় দ্বাদশ সংসদীয় নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে তৃণমুল আওয়ামীলীগ পর্যায়ে মত বিনিময় শুরু করে। সাধারন ভোটারদের কাছে দোয়া প্রার্থনা করে ভোট চাইতে শুরু করেছেন। নুরে আলম সিদ্দিকী কালিয়াকৈর উপজেলা একটি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়ন এবং গাজীপুর মহানগরের ১৮টি ওয়ার্ড কমিটির সকল নেতাকর্মীসহ গ্রাম মহল্লা কমিটির বিভিন্ন নেত্রবৃন্ধের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত, মত বিনিময় সভা সমাবেশের মাধ্যমে জনগনের দুয়ারে দয়ারে পৌছানোর আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে পুনরায় সফলতার পথে হাটবেন।
এমত অবস্থায় সাধারন ভোটার,তৃণমুল আওয়ামীলীগ, স্থানীয় জনগন এবং আওয়ামীলীগের দুর্গ ও উওর বঙ্গের প্রবেশ ও বাহির সদর দরজা গাজীপুর-১ আসন কোন্দলমুক্ত জনদরদী, বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর, সাহসী নির্ভিক এবং সুপরিচিত মুখ নুরে আলম সিদ্দিকীকে এই আসনে কান্ডারী হিসেবে দেখতে চায় সাধারণ মানুষ।