অনাস্থা ভোটে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পরাজয়ের পর ইসলামাবাদ-বেইজিং সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তবে চীনা ও পাকিস্তানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসলামাবাদে বড় রাজনৈতিক উত্থান হলেও চীন-পাকিস্তানের দৃঢ় বন্ধুত্বকে প্রভাবিত করবে না।
গ্লোবাল টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, চীন ও পাকিস্তান উভয় দেশের বিশেষজ্ঞরা দুই দেশের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে আত্মবিশ্বাসী। তারা বিশ্বাস করেন, পাকিস্তানের নতুন সরকার চীনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও সব সহযোগিতা প্রকল্প নিশ্চিতে কোনো প্রভাব ফেলবে না এবং দীর্ঘস্থায়ী ঐতিহ্য বজায় রাখবে।
পাকিস্তানের বিরোধী দলের নেতা শাহবাজ শরিফ সম্ভাব্য সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন। শাহবাজ সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছোট ভাই। সোমবার (১১ এপ্রিল) দেশটির জাতীয় পরিষদে নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে ভোট হবে।
চীনা ও পাকিস্তানি বিশ্লেষকরা মনে করেন, দুই দেশের শক্তিশালী সম্পর্ক পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিবর্তনের দ্বারা প্রভাবিত হবে না।
কারণ, পাকিস্তানের সব দল ও গোষ্ঠী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক রক্ষায় আগ্রহী। ইমরান খানের সম্ভাব্য উত্তরসূরি শরিফের পরিবার দীর্ঘদিন ধরে চীন-পাকিস্তান সম্পর্ক প্রচার করে আসছে এবং দুই দেশের সম্পর্ক খানের সময় থেকে আরও ভালো হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সবসময় চীন-পাকিস্তান সম্পর্কে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করে থাকে। বিশেষ করে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (সিপিইসি) প্রকল্প, চীন-প্রস্তাবিত বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) প্রকল্পে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ মাথাব্যথা রয়েছে। কিন্তু এতে চীনের মাথাব্যথার কোনো কারণ নেই।
পাকিস্তানের বর্তমান অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সমস্যার মূলে কোভিড-১৯ মহামারিসৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকটও রয়েছে। সে সময় করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় চীন পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছিল। এ ছাড়া পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদ দমনেও চীনের সহযোগিতা পাকিস্তানের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ। এর অর্থ হলো, চীন পাকিস্তানের জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য, বিশ্বস্ত, শক্তিশালী ও অপূরণীয় অংশীদার।
গত বুধবার (৬ এপ্রিল) চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন, চীন অন্যান্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি অনুসরণ করে। চীন ও পাকিস্তান সর্বকালের কৌশলগত সহযোগী অংশীদার। ইতিহাস বারবার প্রমাণ করেছে, পাকিস্তানের পরিস্থিতি যেভাবেই পরিবর্তিত হোক না কেন, দুই দেশের সম্পর্ক সবসময়ই অটুট ও শক্ত ছিল।
ঝাও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, অর্থনৈতিক করিডোর নির্মাণ পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতির দ্বারা প্রভাবিত হবে না। পাকিস্তানের বন্ধু হিসেবে আমরা আশা করি, জাতীয় উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার জন্য পাকিস্তানের সব দল ঐক্যবদ্ধ ও একসঙ্গে কাজ করবে।’