যেসব বদভ্যাসে ৪০ পেরোলেই পুরুষরা আক্রান্ত হন হার্ট অ্যাটাকে

লাইফস্টাইল


বেশির ভাগ সময় দেখা যায় পুরুষরা তাদের স্বাস্থ্য নিয়ে অবহেলা করেন। কারণ, তারা নিজেদের স্বাস্থ্য নিয়ে একটু বেশি আত্মবিশ্বাসী থাকেন। অথচ একটা বয়সের পর তাদেরও নানা সমস্যায় পড়তে হয়। এ জন্য অন্যদের মতো তাদের উচিত কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যেকোনো মানুষের মতো পুরুষ মানুষেরও স্বাস্থ্যের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আগে যেখানে বেশি বয়সে সমস্যা দেখা দিত, সেখানে এখন অনেক কম বয়সেই পুরুষরা বেশকিছু জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেশার, কোলেস্টেরলসহ নানা রোগের ফলে বেড়ে যাচ্ছে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। এখন কম বয়সেও পুরুষরা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এমনকি এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর আশঙ্কাও বাড়ছে। চোখের সামনেই আমরা শেন ওয়ার্নের উদাহরণ পেতে পারি।

অথচ গুরুতর এসব রোগের পেছনে আছে আমাদের বাজে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রা। তাই ব্যস্ত জীবনের এসব ভুলেই হয়ে যাচ্ছে জটিলসব রোগ।
একটা বয়স পর্যন্ত কিছু ধকল আমাদের শরীর সহ্য করতে পারে। কিন্তু সেই বয়স পেরিয়ে গেলে প্রতিটি মানুষের সচেতন হওয়া প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ৪০ বছর বয়স হলো এ ক্ষেত্রে মানদণ্ড। তাই এই সময় থেকেই দূর করতে হবে কিছু বদভ্যাস।

আসুন জেনে নেওয়া যাক কী সেই বদভ্যাসগুলো:

​অলস জীবন
অলস জীবন হলো রোগের বাসা। অফিস-আদালতে আমরা সাধারণত বসেই কাজ করি। যার ফলে মস্তিষ্কের ব্যবহার হলেও আমাদের শরীর তেমন খাটে না। এদিকে সারা দিন মাথা খাটিয়ে কাজ করার পর রাতের বেলায় একটু সময় পাওয়া গেলেও শুয়ে-বসেই কাটিয়ে দেওয়া হয়। সুতরাং বলা যায়, আমরা একটা অলস জীবনের মধ্য দিয়েই যাই, যা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতি। তাই প্রতিটি মানুষকে অবশ্যই এ বিষয়টি নিয়ে সাবধান হওয়া প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে দিনে অন্তত ৩০ মিনিট করে সপ্তাহে ৫ দিন ব্যায়াম করা উচিত।

দুশ্চিন্তা
আমাদের জীবন নানা জটিলতার মধ্য দিয়ে যায়। ঘরসংসার, অফিসসহ সব জায়গাতেই কমবেশি ঝামেলা থাকে। এত কিছুর মধ্যে আমাদের মাথায় চাপ বাড়ে। সামান্য একটু চাপের সঙ্গে তা-ও লড়াই করা যায়। কিন্তু নিয়মিত এসব চাপ বাড়তে থাকলে তার থেকে অবসাদ, উৎকণ্ঠা ইত্যাদি রোগ দেখা দেয়। তাই মাথা থেকে চাপ ও দুশ্চিন্তা কমাতে চাইলে নিয়মিত যোগব্যায়াম করতে হবে।

​ঠিকমতো ঘুম না হওয়া
সারা দিনের নানা ঝামেলা সামলে রাতের বেলা একটু ঘুম প্রয়োজন। তবে বহু মানুষের কপালে সেই ঘুমটুকু জোটে না। তারা নিজেদের বেশকিছু বদভ্যাসের কারণে ঘুমাতে পারেন না। এর থেকেই মূল সমস্যাটা তৈরি হয়। আসলে ঘুমের মধ্যে শরীর নিজেকে সারিয়ে নিতে পারে। নিয়মিত না ঘুমালে শরীরের অভ্যন্তরীণ ঘড়ি বাধাগ্রস্ত হয়। যার কারণে সুগার, প্রেশারসহ গুরুতর কিছু রোগ দেখা দেয়। তাই সতর্ক থাকুন। আর দিনে অন্তত আট ঘণ্টা ঘুমান।

​নেশা
মদ্যপান ও ধূমপান শরীরের বড় ক্ষতি করে। মদ্যপান করলে লিভার, অন্ত্রসহ বিভিন্ন জায়গায় ক্যানসারের আশঙ্কা বাড়ে। আবার ধূমপান মুখ, গলা ও ফুসফুসের ক্যানসারের কারণ, এটা নিয়েও মানুষকে ভাবতে হবে। তাই নেশাজাতীয় দ্রব্য ছেড়ে দিয়ে সতর্ক হওয়া ছাড়া অন্য কোনো গতি নেই।

​শরীরের প্রতি নজর না রাখা
পুরুষ মানুষ বেশির ভাগ সময়ই নিজের শরীরের দিকে নজর দেন না। এ কারণে রোগের কিছু প্রাথমিক লক্ষণও তারা লক্ষ করেন না। এর থেকেই সমস্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা থাকে বেশি। কারণ, রোগের প্রথম উপসর্গ চিনতে না পারলে চিকিৎসায় দেরি হয়। আর চিকিৎসায় দেরি হওয়ার অর্থ হলো বড় ধরনের রোগ ও প্রাণঘাতী। তাই প্রথমেই রোগের লক্ষণের দিকে খেয়াল রাখুন। প্রতিবছর একবার করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। বিশেষত, ডায়াবেটিস, লিপিড প্রোফাইল, প্রেশার ইত্যাদি জরুরি পরীক্ষা ৪০ পেরোলেই করা উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *