শিবির সন্দেহে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের তীব্র নিন্দা ও অবিলম্বে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
বুধবার সংবাদমাধ্যমে দেয়া এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাশেদুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল রাজিবুর রহমান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি ওসমান সালেহী ও সেক্রেটারি মোহাম্মদ সুহাইল এ দাবি জানান।
তারা বলেন, শুধুমাত্র সন্দেহের বশে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে বহিষ্কারাদেশ দিয়েছে তাতে ছাত্রসমাজ হতবাক ও ক্ষুব্ধ। শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষতিগ্রস্ত, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানো, বিভিন্ন স্থানে সরকার বিরোধী স্লোগান, অন্তর্ঘাতমূলক কাজের মাধ্যমে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগ আনা হয়েছে। অথচ শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের বাসস্থান মেস থেকে। মেসে অবস্থারত ছাত্ররা কিভাবে দেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষতিগ্রস্ত, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকতে পারে তা সামান্য বোধ সম্পন্ন মানুষেরও বোধগম্য নয়।
অভিযোগের পক্ষে সামান্যতম তথ্য প্রমাণ জাতিকে দেখাতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এটি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বশীল প্রশাসনের কাজ হতে পারে না বরং সরকারের নির্দেশে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দেয়ার দায়িত্বহীন নির্মম খেলায় মেতেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গণমাধ্যমে এসেছে শিবির সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বহিস্কার করা হয়েছে। আমরা জানতে চাই, ছাত্রশিবির কি এদেশে বেআইনি বা নিষিদ্ধ কোনো সংগঠন? ছাত্রশিবিরের সাথে সম্পৃক্ততা সন্দেহে ছাত্রদের বহিষ্কার করতে হবে এমন আইন কোথায় আছে?
নেতৃবৃন্দ বলেন, সামান্য সন্দেহকে পুঁজি করে ১১জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করলেও জগন্নাথ বিশ্বিবিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসকে অনেকবার রক্তাক্ত করেছে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। এখনো ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে সন্ত্রাসীরা। অথচ এখন পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে নূন্যতম ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে। বরং অনেক ক্ষেত্রে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের সহযোগির ভূমিকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দেখেছে জাতি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন দায়িত্বহীন লজ্জাজনক ভূমিকায় জাতি হতাশ ও ক্ষুব্ধ। আমরা অবিলম্বে এ অন্যায় বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে সরকারের আজ্ঞাবহ নয় বরং দায়িত্বশীল অবস্থানে থেকে সকল শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
অন্যথায় ছাত্রসমাজ শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ রক্ষা ও অধিকার আদায়ে আন্দোলনে রাজপথে নেমে আসতে বাধ্য হবে। আর তখন কোনো অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তার দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিতে হবে।