নারী দিবসের প্রাক্কালে লস এঞ্জেলস-এ টাইমস অব ইন্ডিয়া’র মুখোমুখি হয়েছিলেন সাবেক পর্ন তারকা ও বর্তমান বলিউড অভিনেত্রী সানি লিওন। সে যেন অন্য এক সানি, যার সঙ্গে সিনেমার কোনও মিল নেই৷ আলাপে আলাপে বলেন ব্যক্তিগত নানা কথা। পর্ন জগত, বলিউড, ব্যক্তিগত চিন্তাধারা নানা প্রসঙ্গ উঠে আসে আলোচনায়।
প্রশ্ন: ‘বিগ বস’-এ অংশগ্রহণ করার জন্য এই দেশে আসা৷ সেখান থেকে বলিউডে প্রবেশ৷ তারপর অনেক কিছু ঘটে গেছে। এখন আপনি একজন বলিউড স্টার৷ নিজের এই ‘জার্নি’টা কেমন লাগে?
সানি: খুব অদ্ভুত, খুব মজার৷ কিন্তু সব মিলিয়ে আমি এই ‘জার্নি’টা দুর্দান্ত উপভোগ করলাম৷ প্রচুর চড়াই উৎরাই পেরিয়ে উঠেছি, সব মিলিয়ে আমার মনে হয়, নিজেকে সৌভাগ্যবানই মনে করা উচিত৷
প্রশ্ন: একজন নারী হিসেবে লড়াইটা সব সময়ই কঠিন৷ সানি লিওন হিসেবে লড়াইটা তো আরও কঠিন৷ আমেরিকায় আপনারা বন্ধুরা যখন শোনেন, আপনি ভারতে বিরাট স্টার হয়ে গেছেন, তাঁরা কী বলেন? কীভাবে দেখেন গোটা ব্যাপারটা?
সানি: আমার মনে হয় না, এখানে আমার অবস্থানটা ঠিক কেমন, আমি এখানে কে, ওরা খুব ভালো বুঝতে পারে৷ ওরা এই পাগলামিটা কখনো দেখেইনি৷ তাতে একটা সুবিধাই হয়েছে৷ আমি যখন বাড়ি ফিরি, শুধুমাত্র সানি হয়েই ফিরতে পারি৷ আর ‘কেউ না’ হিসেবে জীবনটা উপভোগ করতে পারি৷ অনেককিছু অ্যাভয়েড করতে পারি।
প্রশ্ন: আপনি এখনও নিজের সময় ভাগাভাগি করে চলেছেন লস এঞ্জেলস আর মুম্বাইয়ের মধ্যে৷ এমন কোনও সম্ভাবনা আছে, একটার জন্য অন্যটাকে ছাড়তে হলো?
সানি: কখনও নয়৷
প্রশ্ন: মুম্বাইতে সম্প্রতি কয়েক জন কমেডিয়ান বিতর্কের মধ্যে পড়েছেন ‘এআইবি রোস্ট’ হোস্ট করার জন্য৷ শো-এর গোড়ায় আবেদনমূলক বেশ কিছু ঠাট্টা করা হয়েছিল৷ এআইবি রোস্ট-এর মতো ঘটনা সম্পর্কে আপনার কী মনে হয়?
সানি: দেখুন, আমি আমেরিকা থেকে এসেছি৷ যেখানে এ ধরনের জিনিস নিয়ে কোনও ছুঁতমার্গ নেই৷ প্রায় সব কিছুকেই খোলা মনে গ্রহণ করা হয়৷ তাই আমি একেবারেই ‘শক’ পাইনি৷ কিন্তু আমার মনে হয়, অনেকেই পেয়েছেন৷ কারণ ভারতের মূল্যবোধগুলো একটু অন্য ধরনের৷ তাই এই ধরনের শো থেকে কয়েক লক্ষ মানুষ যেভাবে আনন্দ পাবেন, কয়েক লক্ষ মানুষ সেভাবে দুঃখও পাবেন৷ বাক-স্বাধীনতার প্রেক্ষিতে যদি কথা বলি, এই দামটা আপনাকে দিতেই হবে৷ যদি একেবারে অন্য ধরনের কিছু করতে চান, তাহলে এই ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ জিনিসগুলোও তার পিছন পিছন আসবে, যা আপনাকে গ্রহণ করতেই হবে৷ একদিন নয়, আমি রোজ কিছু মানুষের জন্য, আর কিছু মানুষের দ্বারা ‘রোস্টেড’ হই, তাই আমি একেবারেই আঘাত পাইনি৷
প্রশ্ন: অনেকেই মনে করেন, একজন মানুষ কতোটা ‘আবেদনময়ী’ হবেন, তা তার জিনের মধ্যে থাকে৷ কিন্তু আমরা অনেকেই আবার জানি, ‘আবেদনময়ী’ হওয়াটা একটা ফুলটাইম কাজও হতে পারে৷ কী বলেন আপনি এ ব্যাপারে?
সানি: আমার তো মনে হয়, যে ফ্যাশনই আপনার জন্য আদর্শ হোক না কেন, ‘আবেদনময়ী’ হওয়াটা সব সময়ই ভালো৷ সত্যি বলতে, এর একটা অন্য দিকও আছে৷ যখন কেউ আপনাকে চেপে দেওয়ার জন্য জোর খাটায়, আপনার তো উচিত, উঠে দাঁড়ানোই৷ আবার নতুন করে লড়াই শুরু করার৷ তা করতে যদি আপনার ভয় লাগে, তাও আপনাকে এটা করতেই হবে৷ একমাত্র আপনিই ঠিক করতে পারেন আপনার সাফল্যের মাপকাঠি, তার সীমারেখা৷ আর সেটাই আপনার ‘আবেদনময়ী’ হয়ে ওঠা৷
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া