পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে বাংলাদেশের ‘স্বচ্ছ ও স্বাধীন’ নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে অবহিত করেছেন। এবং বিএনপিকে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে তাকে উৎসাহিত করার পরামর্শ দিয়েছে।
সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরে আয়োজিত তাদের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেনকে বলেন, দেশের নিয়ম-কানুন মেনে চলার জন্য তাদের (বিএনপি) নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় আনুন।
ওয়াশিংটনে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মোমেন বলেন, তিনি মার্কিন পক্ষকে জানিয়ে দিয়েছেন যে বাংলাদেশে একটি ভালো নির্বাচন প্রক্রিয়া ও ব্যবস্থা রয়েছে। এবং একটি (বিএনপি) ছাড়া সব দল এই স্বচ্ছ, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে অংশ নেয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিএনপিকে জনগণের কাছে যেতে হবে এবং ভোট প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের একটি নিরপেক্ষ ব্যবস্থা আছে। আমাদের নির্বাচন কমিশন আছে। তারা (ইসি) স্বাধীন এবং নির্বাচনের সময় তারাই বস।
মোমেন বলেন, তারা (বিএনপি) যদি সত্যিই গণতন্ত্রের প্রতি বদ্ধপরিকর হয়, তাহলে তাদের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করা উচিত। তারা নির্বাচন করতে চাইলে তাদের স্বাগত জানাই।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিএনপির মেয়র তার সিটিতে (সিলেট) খুব স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রাচীনতম আধুনিক গণতন্ত্রগুলোর মধ্যে একটি হলেও মোমেন মার্কিন গণতন্ত্রের দুর্বলতার কথা উল্লেখ করেছেন।
যেখানে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ৫০ বছরের দেশ। যার মধ্যে ১৮ বছর সামরিক-সমর্থিত সরকার ছিল।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বিপুল জনসংখ্যা নির্বাচনে তাদের ভোট দিয়েছে অথচ যুক্তরাষ্ট্রে এই সংখ্যাটা খুবই কম।
মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর থেকে বাংলাদেশে বিভিন্ন পর্যায়ে নির্বাচন হচ্ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দণ্ডপ্রাপ্ত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে আশ্রয় দেয়ার প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন এবং তাকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কের অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন।
এছাড়া তারা জলবায়ু সঙ্কট মোকাবিলায় চলমান সহযোগিতা, গণহত্যার শিকার রোহিঙ্গাদের সম্পর্কে এবং জাতিসঙ্ঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে আঞ্চলিক নিরাপত্তার কথা তুলে ধরেন।
ব্লিঙ্কেন নিরাপদ ও সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক সমাজের ভিত্তি হিসেবে মানবাধিকার, আইনের শাসন ও ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের সঙ্গে ছিলেন সংসদ সদস্য মাহবুবুল আলম হানিফ, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, সচিব (পশ্চিম) শাব্বির আহমদ চৌধুরী এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলাম।