৯৬ এর মত অঙ্গীকার পূরণ হলেই দেশে শান্তি ফিরে আসবে-খালেদা জিয়া

Slider জাতীয়

67597_kh

নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সকলের অংশগ্রহণে দ্রুত একটি নির্বাচনের আয়োজন করলেই কেবল চলমান সঙ্কটের সমাধান হবে মন্তব্য করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, এ নিয়ে ক্ষমতাসীনরা যদি কোন আলোচনা করতে না চায় তাহলে সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব এককভাবে তাদের ওপরেই বর্তাবে। তথাকথিত হলেও একটি সংসদের অধিবেশন চলছে। একতরফাভাবে যে বিতর্কিত পঞ্চদশ সংশোধনী তারা পাশ করেছে তা তারা একতরফাভাবে বাতিলও করে দিতে পারে। তাতে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের পথ খুলবে। এই সংশোধনীর পর বর্তমান ক্ষমতাসীনেরা পদত্যাগ করে নতুন নির্বাচনের ব্যবস্থা করলেই দেশে সঙ্কটের অবসান ঘটবে।

তিনি বলেন, সঙ্কট নিরসনের জন্য ১৯৯৬ সালে আমরা নিয়ম রক্ষার নির্বাচন করে সংবিধান সংশোধনের পর পদত্যাগ করে আমাদের অঙ্গীকার পূরণ করেছিলাম। এখন শেখ হাসিনা অন্তত: এবার যদি তার অঙ্গীকার পূরণ করেন তাহলেই দেশে শান্তি, স্বস্তি ও সমঝোতার পরিবেশ ফিরে আসবে। মানুষ মুক্তি পাবে।
বিকালে গুলশানের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এই সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ৫৩ দিন পর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন তিনি।
চলমান অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, দেশ আজ গভীর সঙ্কটে। এই সঙ্কট সমাধানের চাবিকাটি ক্ষমতাসীনদের হাতে। আশা করি তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। তারা সমঝোতার পথ খুলে দেবে।
খালেদা জিয়া বলেন, চলমান সঙ্কটের মূলে আছে আওয়ামী লীগ। ভাল করে বলতে গেলে শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের এক তরফা সিদ্ধান্তের কারণে এ সঙ্কটের সৃষ্টি। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের সব পথ বন্ধ হয়ে যায়। এখন একটি স্বেচ্ছাচারি সরকার জাতির ঘাড়ে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসেছে। মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। মানুষের ভোটের অধিকার রক্ষায় বিরোধী জোট ঘোষিত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের আন্দোলন অবশ্যই সফল হবে।
খালেদা জিয়া তার বক্তব্যে বলেন, নির্বাচনের আগে বলা হয়েছিল সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য নিয়ম রক্ষার নির্বাচন। শেখ হাসিনা সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তারা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি। অবশ্য প্রতিশ্রুতি রক্ষার তাদের কোন দৃষ্টান্ত নেই।
তিনি বলেন, ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের পর তাদের প্রতিশ্রুতির কারণে আন্দোলনের কর্মসূচি স্থগিত করেছি। আমাদের এই সিদ্ধান্ত যে সঠিক ছিল না তা আমরা অচিরেই বুঝতে পারি। বিচার বর্হিভুত হত্যা, গুম, খুনের মাধ্যমে এক ভীবিষিকাময় পরিস্থিতির তৈরি করা হয়েছে। সারা দেশে চলছে হত্যা ও উৎপীড়নের তা-ব। এতো কিছুর পরও আমরা এক বছর অপেক্ষা করেছি। কারণ আমরা সমঝোতায় বিশ্বাস করি। অতীতেও আমরা সমঝোতার জন্য এগিয়ে গিয়েছি। কিন্তু তারা বরাবরই সংঘাতের পথ বেছে নিয়েছে।
গণতান্ত্রিক  আন্দোলনে হত্যার কোন স্থান নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের আন্দোলন ঘোষণার পর সরকারই হিংসাত্মক পথ বেছে নিয়েছে। এসব করে তারা জাতীয় ঐক্য নষ্ট করেছে।
বিএনপির মুখপাত্র ও যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদকে মুক্তি দেয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, তাকে মুক্তি না দিলে এর পরিণতি ভাল হবে না।
নিরপরাধ মানুষকে যারা পণ্যে পরিণত করে তাদের ক্ষমতায় থাকার কোন অধিকার নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, সরকার সঙ্কটকে দীর্ঘায়িত করতে চায়। এজন্য গণতান্ত্রিক আন্দোলন চলার সময় নাশকতা করে এই আন্দোলনকে জঙ্গি সন্ত্রাসী কাজ বলে প্রচার করছে তারা। জনগণের আন্দোলনকে অগ্রাহ্য করার জন্য আন্দোলনকে জঙ্গিবাদী বলে অপপ্রচার করছে। বিএনপি ও ২০ দল জনগণকে মেরে আন্দোলন করায় বিশ্বাস করে না। আমাদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণ আন্দোলন। মানুষের জীবনসংহারীদের খুঁজে বের করে কঠিন শাস্তি দেয়ার আমি দাবি জানাচ্ছি। এসব ঘটনার আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি করছি। তিনি বলেন, জনগণ আমাদের সঙ্গে আছেন। আমরা তাদেরকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতে পারি না। সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান ও বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়লেও উপস্থিত সাংবাদিকদের কোন প্রশ্নের জবাব দেননি ২০ দলীয় জোট নেত্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *