হঠাৎ করেই গরমের কারণে রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী কিছু এলাকায় ডায়রিয়া রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় গত কয়েকদিনে রাজধানীর মহাখালীর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর’বি) হাসপাতালে রেকর্ড সংখ্যক রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার আইসিডিডিআর’বি এক বিবৃতিতে জানায়, দুই দিনেই হাসপাতালটিতে দুই হাজার ৪০৯ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। ২৪ মার্চ রাত পর্যন্ত এক হাজার ১৭৬ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হন। এর আগের দিনও (২৩ মার্চ) রাত পর্যন্ত এক হাজার ২৩৩ জন রোগী ভর্তি হন।
কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, শনির আখড়া, মোহাম্মদপুর, টঙ্গী ও উত্তরা থেকে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী বেশি আসছে।
এর আগে ২৩ মার্চ হাসপাতালটির মিডিয়া বিভাগ সূত্র জানিয়েছিল, গত সাতদিনে ৮ হাজার ১৫২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দৈনিক ১২ থেকে ১৩শ’ ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে আসছেন। যাদের অধিকাংশকে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। ফলে হাসপাতালটির ৬০ বছরের দৈনিক ভর্তি রোগীর রেকর্ড ছাড়িয়েছে।
হঠাৎ ডায়রিয়া রোগী সংখ্যা বাড়ার কারণ প্রসঙ্গে আইসিডিডিআর’বির প্রধান ডা. বাহারুল আলম বলেন, শীত আর গরমের শুরুতে বছরে দুইবার ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ে। সাধারণত মার্চের শেষ সপ্তাহে রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে শেষ সপ্তাহে রোগী চূড়ান্তভাবে বাড়ে। কিন্তু এ বছর ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে। রোগী বাড়লে সর্বোচ্চ এক হাজারের মতো হয়। কিন্তু এবার গরমের শুরুতেই হাজার ছাড়িয়ে গেছে প্রতিদিনের রোগীর সংখ্যা।
ডা. বাহারুল আরও বলেন, ‘গরমের সময় অনেকে অনিরাপদ পানি পান করেন। আর গরমে ওই জীবাণুটি অনুকূল পরিবেশ পায়। এই সময়ে জীবাণু বেশিক্ষণ বেঁচে থাকে। এতে ডায়রিয়া আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।’
ডায়রিয়া থেকে মুক্তির জন্য এই চিকিৎসক বলেন, ‘বাইরের খোলা খাবার খাবেন না। পানি যদি খেতে হয় তাহলে তা যেন ফোটানো হয়। এক কথায় আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে পানি জীবাণুমুক্ত কি-না। সেইসঙ্গে করোনাকালীন সময়ের দুই বছরে হাত ধোয়ার যে একটা ভালো অভ্যাস তৈরি হয়েছিল, এটা বজায় রাখুন। খাবার পরে নয় খাবার আগে হাত ভালোভাবে সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে তবেই খাবার খান।’